সোনাইছড়ির বাঁকে

10

মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন

মুদ্র দেখার বড্ড শখ। চলো সমুদ্র দেখতে যাই।”Ñ বললো রাগিব।
“আমাকে দ্যাখো। আমি সমুদ্র-তনয়া, ধরতে পারো আমি এক জলপরি। আবাল্য বেড়ে উঠা আমার সমুদ্রের জল-হাওয়ায়। আমার মধ্যে দেখবে উত্তাল ঢেউ, বালিয়াড়ি, বেলাভ‚মিÑ সব।”- উত্তরে বললো শিউলি।
“তা ঠিক বটে; তবে তুমি সমুদ্রের চেয়ে আরও বেশি কিছু। তোমার চোখগুলো যেন সাগর-দুটি পাশাপাশি। ঐ সাগরে ডুবে মরতে আমার চিরসাধ।”- জবাবে বললো রাগিব।
“ডুব তো দিয়েছো সেই কবে। এখন সাঁতার কাটার পালা।”- শিউলি উত্তরে বলে।
“আমি তো সাঁতারে আনাড়ি। তুমি আমার সাঁতার-মাস্টার হবে। আমি ডুব-সাঁতারে সে-সাগর তলদেশের মণি-মুক্তা আহরণ করবো।”- প্রত্যুত্তরে রাগিব জানালো।
শরতের রাতের আকাশ। দ্বাদশী চাঁদের জোছনা। চারিদিকে শিউলি, হাসনাহেনা ও জুঁইফুলের মৌ মৌ গন্ধ। আকাশে সাদা মেঘের লুকোচুরি খেলা। চাঁদটাকে দেখে মনে হয়, মেঘের ভেলায় চড়ে যেন নববধূ নাইয়র যাচ্ছে। বাতাসে নববধূর চেলির কিনার পতাকার মতো উড়ছে। জোছনায় লাল দুপাট্টধারী নব-বধূকে মনে হচ্ছে যেন স্বপ্নের কোনো অপ্সরী। ভরা জোছনা ছড়া-খালের দু-তীরের কাশবনে সুন্দরের পসরা সাজিয়েছে। শিউলি আর রাগিব এক তীরের কাশবনে বসে আছে- “… অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন”-এর মতো। আজ স্বল্পভাষী শিউলি কেমন যেন মুখরা হয়ে উঠেছে। রাজ্যের সব কথার ফুলঝুরি তার মুখে; যেন বাঁধভাঙা জল তীব্র বেগে নদীর দুক‚ল প্লাবিত করে ধেয়ে চলছে। শিউলির প্রতিটি কথা রোমাঞ্চে ভরা। শৈশব-কৈশোর-যৌবনের বাছাই করা কাহিনি আজ রাগিবকে শোনাবে। শিউলির সুখ-দুখ, আনন্দ-বেদনা, রোমাঞ্চ-ভালোবাসা কোনো কিছুই আজ বাদ যাবে না। এরই মধ্যে চাঁদের আলোছায়া শিউলির কপোল ছুঁয়ে যায়। রাগিব সেখানে দেখে ভবিষ্যতের স্বপ্নঘর; যে স্বপ্নঘরের অন্দরে রয়েছে শিউলি আর রাগিবের হৃদয়। জীবনের শেষ বিসিএস-পরীক্ষায় রাগিব উত্তীর্ণ হলেও কোনো এক অজানা কারণে এবং পুলিশ-ভেরিফিকেশনে সে অযোগ্য হয়ে পড়ে। রাগিবের প্রখর মেধা থাকলেও যথেষ্ট টাকাপয়সা, মামার জোর বা দলীয় পরিচয় না-থাকায় বারবার ভাইভাতে ঝরে যায়। একটি কর্মসংস্থান হয়না বলে সে চোখে-মুখে সর্ষেফুল দেখে। তবে ছাত্রজীবনে অবসর সময়ের এক এনজিও-র গণশিক্ষার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এবার এটাকে পুঁজি করে বহু ইন্টারভিউ ফেস করে সে। এক পর্যায়ে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হেড-মাস্টারের চাকুরি সে পেয়েও যায়। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হলেও বিদ্যালয়টি সরকারি সিলেবাস ও কারিক্যুলামের অধীনেই পরিচালিত হয়। চাকুরির বাজার এখন মহার্ঘ। ‘চাকুরি’ নামক সোনার হরিণ বাংলাদেশে আজ বিরল। তাই রাগিব এ চাকুরিকে নিজের অদৃষ্টের পাওনা বলেই মেনে নেয়।
গ্রামের নাম মৌরিতলা। আবহমান বাংলাদেশেরই চিরায়ত-একটি গ্রাম। এ গ্রামই রাগিবের নাভিকাটা সূতিকাগার। মৌরিতলার আলো-বাতাসেই রাগিবের বেড়ে উঠা। শৈশব-কৈশোর কাটিয়ে যৌবনেই লাল-নীল নিয়নের আলো-ঝলমল রুক্ষ শহরে তার ছাত্রত্ব চুকায়। রাগিবের কৃষক-বাবা মারা যান তার বয়স যখন বাইশ বছর। সংসারের বড়ো ছেলে সে। তাই বাবার পাঁচ সদস্যের সংসারের ঘানি টানার ভার সহসাই তার ওপর এসে পড়ে। রাগিবের এক বোন বিবাহযোগ্যা, ছোটো ভাইটি সদ্য এসএসসি পাশ করেছে। আর সবার ছোটো বোনটি এখনও প্রাইমারিতে। কর্মক্ষম ব্যক্তি বলতে সংসারে শুধু রাগিব একাই। তাই পরিবারের দায় মেটাতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হেড-মাস্টারের চাকুরি নিতে পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করে।
বিদ্যালয়টি পার্বত্য জেলার ছোট্ট স্রোতঃস্বিনী “সোনাইছড়ি” ছড়া-খালের উজানে। এখানে শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং নদীভাঙনের শিকার জনগোষ্ঠীর সন্তান। পাহাড়ি পথ হওয়ায় রাগিবকে রোজ স্কুল করতে হয় কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে। নগরসভ্যতার সুযোগ-সুবিধা এখানে নেই বললেই চলে। দেশের প্রান্তিক জনপদ বলতে যা বোঝায় এ-এলাকা ঠিক তাই। বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী ও পাহাড়ি বন-বনানীর ওপর নির্ভরশীল। তবে এখানে প্রকৃতি উদার। চারিদিকে সবুজের সমারোহ, পাখপাখালির কিচিরমিচির কলতান, ছোটো-বড়ো বুনো পশুদের আনাগোনা, ছোটো ছোটো শৈলপ্রপাত; সব মিলিয়ে প্রকৃতি এখানে একেবারে দিগম্বর। মাথার উপরে নীলাকাশ, নিচে সবুজের গালিচায় পাহাড়ি ঝরণাধারার স্বর্গীয় এক পরিবেশ। ধর্মগ্রন্থে “জান্নাত”-এর পাদদেশে যে ঝরণাধারা প্রবাহিত হওয়ার কথা বর্ণিত রয়েছে— বোধহয় এটাই সে নিসর্গের রেপ্লিকা।
রাগিব ছোটোবেলা থেকেই গ্রামে বড়ো হওয়া মানুষ। শুধু উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও ডিগ্রি-অর্জনের জন্যই তাকে শহরের ইট-পাথরের পাষাণ বুকে বেশ কিছুকাল কাটাতে হয়েছে; কিন্তু প্রকৃতির উপাদান তার রক্ত-মাংসে প্রোথিত। সে প্রকৃতিকে প্রচন্ড রকম ভালোবাসে- যেমন ভালোবাসে শিউলিকে। শিউলির সাথে তার প্রথম পরিচয় এখানেই। ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’ বলে যে কথাটি প্রচলিত আছে, ঠিক সে-রকমই শিউলিকে প্রথম দর্শনেই রাগিবের অন্তরে প্রেমের সঞ্চার হয়। শিউলির সাথে প্রথম দেখা থেকে শুরু করে কাছে আসা, ঘনিষ্ঠ হওয়া সবই সোনাইছড়ির বাঁকে; দুই তীরের ঘাসের সবুজ গালিচায় কিংবা কাশফুলের কোমল চাদরে। এমন নিসর্গে কাউকে প্রেম করতে হয় না বরং প্রেমই হৃদয়ে শরৎ প্রভাতের ‘রবির কর’-এর মতো আপনা-আপনি উদ্ভাসিত হয়; প্রেম ধরা দিয়ে বিহব্বল করে দুটি হৃদয়-কন্দর।
শিউলি নদী-সিকস্তি নয় বরং সমুদ্র-সিকস্তি সুন্দরী ললনা। তাদের আদি নিবাস বাংলাদেশের স্থলভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে। প্রাকৃতিক দৈবদুর্বিপাক, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদিকে বুক চেতিয়ে মোকাবেলা করার মতো সাহসী মেয়ে শিউলি। পিতা মৎস্যশিকারি ও মৎস্যব্যবসায়ী। রূপকথার বাদশাহর ‘নুনের মতো ভালোবাসা’র সেই রাজকুমারীর মতো আমাদের দ্বীপ-কন্যা শিউলি এ-যুগের রাজকুমারীরই প্রতিরূপ যেন। কীভাবে লবণ উৎপাদন করতে হয়, গোলাজাত করতে হয় এবং কীভাবে সেগুলো বাজারজাত করলে ভালো মুনাফা পাওয়া যায় সবকিছু শিউলির নখদর্পণে। আবার লইট্টা, পোঁপা, ছুরি, সুরমা, রূপচান্দা প্রভৃতি মাছ কীভাবে শুঁটকি করতে হয়— সব কাজে শিউলি বেশ পারদর্শী। প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকাই শিউলিদের জীবন।
এক সময়কার প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড়ে শিউলির পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সে ঝড়ে ঘর-বাড়িসহ মা-বাবা উভয়কে হারায় শিউলি। একমাত্র সহায় বলতে রয়েছে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ছোট্ট ভাই বাবলু। নিঃস্ব শিউলি সিদ্ধান্ত নেয়: সে আর রাক্ষুসে সাগরের বুকে থাকবে না। পাড়ার আরও-দশজনের সাথে অজানা পথে পা বাড়ায় শিউলি। শেষপর্যন্ত সে দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয়ের সহায়তায় উঠে আসে পার্বত্য জেলার সোনাইছড়ি পাহাড়ের পাদদেশে। না-খেয়ে মরলেও অন্তত সে এখানে ডুবে মরবে না— এ আত্মবিশ্বাস তার রয়েছে। পাহাড়ি এলাকাটি সরকারি পিএফ (প্রোটেক্টেড ফরেস্ট) অঞ্চল। অসহায় মানুষেরা এখানে এসে ঠাঁই নেয় ফি-বছর। এখন বিরাট বসতি গড়ে উঠেছে এখানে।
খেটে-খাওয়া পরিবারের মেয়ে হলেও শিউলি নিজ উদ্যোগে এলাকার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ “সিন্ধু-কমল সরকারি কলেজ”-এ লেখাপড়া করেছে; কিন্তু প্রাকৃতিক ঝড়-ঘূর্ণির কারণে সে ঝরে পড়ে লেখাপড়া থেকে। তবু সে সাহসে বুক বেঁধে শপথ নেয়: অদৃষ্টের খেলায় যেখানেই সে থাক-না কেন, পড়াশোনা সে চালিয়ে যাবেই। অন্তত সে তাতে সমর্থ না-হলেও বাবলুকেই সর্বোচ্চ শিক্ষাদীক্ষায় বড়ো করে তুলবে। শেষ পর্যন্ত শিউলি নিজের জন্যে শপথ রক্ষা করতে পারে না। তার কলেজ-লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে এখানেই। তাই এবার বাবলুকে নিয়েই তার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় সে। বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে স্থানীয় ‘সোনাইছড়ি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’-এ বাবলুকে শিউলি ভর্তি করাতে নিয়ে আসে। ভাইয়ের ভর্তির সুবাদেই প্রথম দর্শন হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিস্টার রাগিব আহমেদের সাথে। প্রথম চোখাচোখিতেই উভয়ের অন্তরে যেন অজানা বিদ্যুৎ চমকায়। প্রথম দেখা আর ভালো লাগার অনুভ‚তির রেশ যেন কাটেই না। মৃদু ভ‚মিকম্প চলে উভয়ের হৃদয়-তলে। ঐ দিন বাবলুর ভর্তিপর্ব সেরে যে-যার মতো অবস্থানে চলে যায়।
একদিন বিদ্যালয় অফিসে পিওন এসে একটি চিঠি দিয়ে যায়। চিঠিটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জন্য নামকরা একটি এনজিও-র প্রশিক্ষণ-গ্রহণ সংক্রান্ত। এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ। সাথে কিছু সম্মানিরও ব্যবস্থা আছে। রাগিবের জন্য এটি একটি মহার্ঘের সমান। সামনের মাসের এক তারিখ থেকে প্রশিক্ষণ শুরু। রাগিব সিদ্ধান্ত নেয়: এ সুযোগ হাতছাড়া করা যায় না। সহকর্মীদের সাথে মিটিং করে সাব্যস্ত হয়: প্রশিক্ষণকালীন এক সপ্তাহের জন্য স্কুলের ক্যাচমেন্ট এরিয়ার কোনো শিক্ষিতা মহিলাকে অস্থায়ীভাবে ক্লাস-করানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে। রাগিবের সহকর্মী শ্রীমতী পুরবি চৌধুরী নাজমা জাহানের নাম প্রস্তাব করলে সবাই তাতে সমর্থন জানায়। নাজমা আপা স্কুলের পাশের মুসলিম-পাড়ার বাসিন্দা; একজন শিক্ষিতা মহিলা। রাগিবের এ-কর্তব্যনিষ্ঠার কথা স্কুল-পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ফাইতং মৌজার হেডম্যান উ ম্রা মং জানতে পেরে ভারি খুশি হন। তিনি মনে মনে ভাবেন: হয়তো এ-বছর স্কুলটা সরকারি হয়ে যাবে।
রাগিব তার প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করে। তার চৌকশ পারদর্শিতার জন্যে প্রশিক্ষণের সমাপনী দিবসে পুরস্কার লাভ করে সে। এবার স্কুলে ফেরার পালা। ইতোমধ্যে রাগিবের কাছে ‘উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস’ থেকে ফোন করে জানানো হয়, ‘সোনাইছড়ি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ বাবলু নামের একজন শিক্ষার্থী এ-বছর পুরো জেলায় প্রথম হয়ে ট্যালেন্টপুল-বৃত্তি লাভ করেছে। খুশিতে রাগিবের মনটা ভরে যায়। সাথে সাথে তার হৃদয়াকাশে দোল খায় শিউলি ফুলের রঙিন বোঁটার মতো স্নিগ্ধ সুবাতাস। বাবলুর সুখবরটি জানলে শিউলি নিশ্চয়ই খুশিতে আটখানা হয়ে পড়বে; ভুলে যাবে অতীতের সব-হারানোর বেদনা।
রাগিব মনে মনে ভাবে: তার অনুপস্থিতিতে খন্ডকালীন যে শিক্ষিকাকে ক্লাসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো তার জন্যে সৌজন্যমূলক কিছু গিফ্ট নেওয়া দরকার। তাই সে ‘গোলাপগঞ্জ’ খ্যাত স্থানীয় একতা বাজারের ‘পুষ্প বিতান’ থেকে একগুচ্ছ গোলাপ ও রজনিগন্ধা কিনে নেয়; আর কিছু টুকিটাকি গিফ্ট।
পরদিন যথাসময়ে স্কুলে যায় রাগিব। ক্লাস-শেষে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সবাইকে নিয়ে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। যথাযথ ক্লাস-পরিচালনা ও উপস্থিতির জন্য শিক্ষকমন্ডলীকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাগিব গিফ্ট প্রদানের অভিপ্রায়ের কথা জানায়। তার সাথে বাবলুকেও সংবর্ধনা জানানোর কথা বলে। শুরুতেই বাবলুকে ‘স্কুল পরিচালনা কমিটি’র সভাপতি উ ম্রা মং মূল্যবান উপহার দিয়ে সংবর্ধিত করে। পরে নাজমার নাম ঘোষণা করা হলে মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে নাজমা জাহান পুরস্কার নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক রাগিব আহমেদের কাছে যায়। রাগিব দেখে, এ-যে শিউলি! তারই হৃদয়েশ্বরী! এতদিন নামের আড়ালে নাজমা জাহানরূপী শিউলিকে সে চিনতেই পারেনি। গোলাপ আর রজনিগন্ধার তোড়া রাগিব শিউলির হাতে তুলে দিতেই উভয়ের করস্পর্শে অজানা শিহরণ জেগে উঠে। এ-তো শিউলিকে গিফ্ট দেওয়া নয়; যেন প্রথম প্রেম নিবেদন, প্রথম শিহরণ, প্রথম হৃদয়ের আলোড়ন। মনের অজান্তেই রাগিব অস্ফুট স্বরে গেয়ে উঠে: ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানি, দেবো খোঁপায় তারার ফুল।’