স্বার্থ বিকিয়ে বিদেশি ঋণে নতুন অর্থমন্ত্রীর ‘না’

32

বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে শক্ত অবস্থান নিয়ে দর কষাকষি করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন সরকারে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার দুদিন পর বুধবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচিতি সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ইআরডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সভায় অর্থমন্ত্রী ইআরডি কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, তাদেরকে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও বিদেশি ঋণ সংস্থার সাথে নেগোসিয়েশন করতে হবে, যেন বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত থাকে। ‘এক্ষেত্রে ঋণচুক্তির শর্তসমূহ বাংলাদেশের অনুকূলে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।’ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফর মতো সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে ঋণ নিয়ে আসছে। এতদিন স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সহজ শর্তে ঋণ পেলেও বিশ্ব ব্যাংকের মাপকাঠিতে উত্তরণের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতিসংঘের মাপকাঠিতেও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে। ফলে এখন ঋণদাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশের জন্য সুদের হার বাড়াচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক থেকে বেশি সুদে ঋণ নেওয়াও শুরু করেছে বাংলাদেশ। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সুদের হার বাড়লেও অর্থনীতির সক্ষমতার বৃদ্ধির দিকটি দেখিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুস্তফা কামালও বলেন, ইআরডিকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ঋণ সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। ‘বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত কোনো ঋণের একটি কিস্তি প্রদানে এক ঘণ্টার জন্যও বিলম্ব করেনি। বাংলাদেশের বিদেশি ঋণে জিডিপির আনুপাতিক হার মাত্র ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। যেখানে ঝুঁকিমুক্ত মাত্রা হল ৪০ শতাংশ।’ আমাদের এ সক্ষমতা ধরে রাখতে হবে, যদি তা পারি তাহলে ভবিষ্যতে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক অর্থায়ন সহজতর হবে, বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছোট আকারের প্রকল্পে ঋণ দেওয়ায় অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা দেন। ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ পরিচিতি সভায় ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।