নিপাহ্্ ভাইরাস থেকে শিশুর সুরক্ষা

7

প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী

নিপাহ্্ ভাইরাসজনিত অসুখ প্রথম ধরা পড়ে ১৯৯৯ সালে। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। নিপাহ্্ ভাইরাস প্যারামিক্সো ফ্যামিলির অন্তর্ভুক্ত এক ধরনের আরএনএ ভাইরাস। এটা প্রথমত ছড়ায় সংক্রমিত পশু থেকে মানুষে। বাদুরে খাওয়া খাবার, ফলমূল বা সংক্রমিত পশুর-(যেমন শুকর) মাংস, লালা, প্রস্রাব প্রভৃতি বর্জ্য পদার্থ থেকেও মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। নিপাহ্্ ভাইরাস সংক্রমণ মৃদু থেকে মারাত্মক প্রকৃতির হয়ে থাকে। এই সংক্রমণজনিত অসুখের মৃত্যুহার প্রায় ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ।
নিপাহ্্ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের ৪ থেকে ১৪ দিনের মাথায় রোগের উপসর্গাদি দেখা দেয়। প্রথম দিকে জ্বর, শিরঃপীড়া, কাশ, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বমি ইত্যাদি দেখা দেয়। পরবর্তী সময়ে অসুখ মারাত্মক প্রকৃতির রূপ ধারণ করতে পারে। যেখানে প্রকাশ পায় মস্তিষ্কের সংক্রমণ বা এনকেফালাইটিস এর লক্ষণাদি, যেমন-চেতনাহীন অবস্থা, কোমা ও খিঁচুনি।
রোগ নির্ণয়-চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা :
১. নিপাহ্্ ভাইরাস সংক্রমণ অসুস্থকালীন সময়ে বা রোগ থেকে সেরে উঠার পরও আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়।
২. নিপাহ্্ ভাইরাস সংক্রমণের সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। এ সংক্রমণের প্রধান চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা হলোÑ পুষ্টিমাণ বজায় রাখা, শরীরের জলীয় ভাগ পূরণ, বিশ্রাম, ও অন্যান্য উপসর্গাদির সহায়ক চিকিৎসা।
রোগ প্রতিরোধ :
যেসব দেশে (বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ভারত এবং সিঙ্গাপুর) নিপাহ্্ ভাইরাসজনিত সংক্রমণের মহামারী দেখা দিয়েছে সেখানে শিশু ও জনগণকে রোগপ্রতিরোধমূলক এসব ব্যবস্থাদি অবলম্বন করা উচিত।
১. নিয়মিতভাবে সাবান জলে হাত পরিষ্কার রাখা
২. অসুস্থ বাদুর বা শুকরের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
৩.বাদুরে খাওয়া যেকোনো পানীয় (যেমন- খেজুরের রস), কাঁচা ফলমূল বা মাটিতে পড়া ফল কখনো যেন শিশুকে খাওয়ানো না হয়
৪. আক্রান্ত ব্যক্তির লালা, মূত্র, প্রস্রাব এরুপ যেকোনো বর্জ্য পদার্থ এর সংস্পর্শ থেকে শিশুকে দূরে রাখা।

লেখক-প্রফেসর ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান,
শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ-চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।