চোখ ও ত্বকের যত্নের ভার ছেড়ে দিন মিষ্টি কুমড়ার ওপর

7

হাসিনা আকতার লিপি

যত দিন বাঁচবেন, সুস্থ চোখ নিয়ে বাঁচবেন বলে ভাবছেন? কিংবা ত্বকের কমনীয়তা কী করে বাড়ানো যায়, সে উপায় খুঁজছেন? চিকিৎসক বা বিউটিশিয়ানের কাছে না ছুটে আজ থেকে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া রাখুন খাদ্যতালিকায়। আপনার চোখ ও ত্বকের যত্নের ভার অনায়াসেই ছেড়ে দিতে পারেন পুষ্টিকর এই সবজির ওপর। ঘন্ট কিংবা ভাজি, যেভাবেই খান না কেন, মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টি উপাদান অক্ষুণ্ন থাকে। পশ্চিমারা এই সবজি দিয়ে মজাদার পাই তৈরি করে। পামকিন পাই বিশ্বজুড়েই সমাদৃত। এই সবজির খোসা থেকে বিচি—সবটাই ভক্ষণযোগ্য। এক কথায় এই সবজির ফেলনা নয় কিছুই। প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানের ‘পাওয়ার হাউস’ বলা যেতে পারে মিষ্টি কুমড়াকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত খাদ্যতালিকায় মিষ্টি কুমড়া রাখলে কেবল চোখ ও ত্বক সুস্থ থাকে না, এড়ানো যায় অনেক অসুখ-বিসুখ। মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, লোহা ও ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদানেও সমৃদ্ধ এই সবজি। চোখের যতেœ: রান্না করার পর মিষ্টি কুমড়ার বিটাক্যারোটিন ভিটামিন এতে পরিণত হয়। আর ভিটামিন এ চোখের ছানি পড়া ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। খাদ্যতালিকায় নিয়মিত এ সবজি রাখলে দৃষ্টিশক্তি আরও প্রখর হয়। ত্বকের যত্নে: ত্বকের সুরক্ষায় মিষ্টি কুমড়ার ভূমিকা অসামান্য। চোখের পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়ার বিটাক্যারোটিন ত্বককে আরও মসৃণ ও কমনীয় করে তোলে। মিষ্টি কুমড়ায় ফ্যাটিঅ্যাসিড থাকায় ত্বকে সহজে বলিরেখা বা ভাঁজ পড়ে না। আর ভিটামিন সি থাকায় ত্বক হয় লাবণ্যময়। এতে আলফা-ক্যারোটিন জাতীয় উপাদান শরীরকে অকালে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। দাঁত ও হাড়ের যত্নে: মিষ্টি কুমড়ার শাঁসালো অংশে এবং এর বীজ বা দানায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকায় এটি হাড় ও দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার অভ্যাস দাঁত ও হাড়কে করবে আরও মজবুত। ক্যানসার প্রতিরোধে: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি ঠেকায়। হৃৎপিন্ডের ধমনির দেয়ালে চর্বির স্তর জমতে বাধা দেয়। সর্দি-কাশি প্রতিরোধে: মিষ্টি কুমড়ার ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সর্দি-কাশি ও ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। হজমশক্তি বৃদ্ধি: মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় তা সহজেই হজম হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মিষ্টি কুমড়ার জুড়ি নেই। ওজন কমাতে: মিষ্টি কুমড়ায় কোনো সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই এবং এতে ক্যালরির মাত্রাটাও সামান্য। এতে রয়েছে পুষ্টিকর আঁশ। তাই এই সবজি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে ও ওজন কমাতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।

লেখক: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ল্যাব এইড লিমিটেড (ডায়াগনস্টিক) ও পার্ক ভিউ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেড, চট্টগ্রাম।