‘ফেসবুক যোগাযোগে’ কিডনি বেচাকেনা গ্রেপ্তার ৫

7

‘ফেসবুকে যোগাযোগের’ মাধ্যমে কিডনি বেচাকেনায় জড়িত একটি চক্রের একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্যক্তিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ঢাকাসহ জয়পুরহাটের বিভিন্ন স্থান থেকে সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬),মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আব্দুল মান্নান (৪৫) এবং মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)।
এদের মধ্যে ইমরান ‘বাংলাদেশ কিডনি ও লিভার পেশেন্ট চিকিৎসা সেবা’ এবং ‘কিডনি লিভার চিকিৎসা সেবা’ নামে ফেসবুকে দুটি পেইজ খুলে এই চক্রটি পরিচালনা করে আসছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
গ্রেপ্তার আব্দুল মান্নান মূলত কিডনি দাতাদের অর্থের কথা বলে প্রলুব্ধ করেন। এর আগে তিনি এই অপরাধে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ছয়টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
মান্নানের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেন তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘এই চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং কিডনি জোগাড় করা সম্ভব বলে আশ্বস্ত করে। পরে তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবি মানুষদের চিহ্নিত করে অর্থের লোভ দেখিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনে প্রলুব্ধ করে’।
এই চক্রের ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছে এবং তারা তিনভাগ হয়ে কাজ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম গ্রুপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাদের কিডনি প্রয়োজন তাদের সাথে যোগাযোগ করে। পরের সদস্যরা পূর্বের গ্রুপের চাহিদা অনুযায়ী গরিব-অভাবি মানুষকে খুঁজে বের করে এবং শেষ ধাপে থাকা গ্রুপটি দ্বিতীয় গ্রুপের সংগ্রহ করা কিডনি ডোনারদের যাবতীয় পরীক্ষা করে পার্শ¦বর্তী দেশে বৈধ/অবৈধভাবে নিয়ে যায়’।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান কিডনি দাতাদের পাসপোর্ট, মেডিকেল ভিসা এবং অন্যান্য কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেন। এ কাজে তারা জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা নেন। তাদের কাছ থেকে কিডনি দাতাদের ৪টি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।
র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘যাদের কিডনি প্রয়োজন তাদের কাছ থেকে অবস্থা ভেদে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে পরে কিডনি দাতাকে কখনো দুই লাখ বা এক লাখ টাকা দিয়ে থাকে। চক্রটি দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে নিকটাত্মীয় বানানোর সকল ধরণের জাল কাগজপত্র তৈরি করে থাকে, যেন কোথাও কোনো সমস্যা না হয়’।
প্রতারক চক্রটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিডনি দাতাকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টাকা না দিয়ে ‘জীবন নাশের’ হুমকি দিয়ে থাকে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানায় র‌্যাব। খবর বিডিনিউজের