ভেনিসের মতো আশ্চর্য সৌন্দর্যের নগরী যে দেশটিতে, সেটি হলো ইতালি। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য বিধাতা যেনো দু’হাত ভরে দিয়েছেন দেশটিকে। বিশ্বের যে দেশটি এত সুন্দর, পরিমার্জিত এবং ইতিহাস নির্ভর, সেই দেশটির অনেক শহর এবং গ্রাম এখন জনশূন্য হয়ে পড়ছে। জনসংখ্যার অভাবে অনেক গ্রাম এখন ভূতের গ্রামে পরিণত হতে চলেছে।
ইতালির ছোট্ট বেশ কয়েকটি শহরের পাশাপাশি অনেক গ্রামই এখন জনশূন্য হয়ে পড়ছে। জনসংখ্যা বাড়াতে সেসব গ্রামের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে চমকপ্রদ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। এর মধ্যে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ সিসিলির সাম্বুকা গ্রামে ১ ইউরোতে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৫ টাকা) বাড়ি বিক্রির লোভনীয় সুযোগ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। যা সংবাদ শিরোনামও হয়েছে। তবে দেশটির উত্তর-পশ্চিমের পিমন্তে অঞ্চলের দুটি গ্রামে জনসংখ্যা বাড়ানোর কর্মসূচি হিসেবে যে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তা শুনলে যে কারো সেখানে যেতে ইচ্ছা করবে।
গ্রাম দুটির একটি ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড সীমান্তের উঁচু পর্বতঘেরা। ইতালির ছোট্ট গ্রাম লোকানা। দ্বিতীয়টির নাম বোর্গোমেজ্জাভাল্লে। লোকানার আরও উত্তরে এই গ্রামটির অবস্থান। গ্রাম দুটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, কেউ এই দুই গ্রামের যেকোনো একটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলে ১ ইউরোয় বাড়ি কেনার সুযোগ তো থাকছেই, সঙ্গে উপহার হিসেবে দেওয়া হবে ৯ হাজার ইউরো। এতেই শেষ নয়, ব্যবসার জন্য দেওয়া হবে আরও ২ হাজার ইউরো। বসবাস শুরু করার পর সন্তানের জন্ম হলে প্রতি সন্তানকে ১ হাজার করে ইউরো দেবে কর্তৃপক্ষ।
বাসিন্দা কমতে কমতে ক্রমে ‘ভূতের গ্রাম’ হওয়ার উপক্রম হয়েছে লোকানা গ্রাম। এখানকার মেয়র জোভান্নি ব্রæনো মাত্তিয়েত বলেন, যারা লোকানায় স্থায়ী বাসিন্দা হতে চাইবেন তাদের বাচ্চা হওয়া মাত্র ও বার্ষিক আয় ৬ হাজার ইউরো ছাড়ালেই তিন বছরে মোট ৯ হাজার ইউরো পুরস্কার হিসেবে দেবেন তিনি।
জোভান্নি বলেন, ‘আমাদের গ্রামের জনসংখ্যা ৭ হাজার থেকে মাত্র দেড় হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। যারা আছেন, তারা অনেকে বড় বড় শিল্পকারখানায় চাকরি নিয়ে এখন গ্রামে থাকছেন না। এখানকার স্কুলগুলো ফি বছর নতুন শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে।’
বোর্গোমেজ্জাভাল্লের অবস্থাও অনেকটা একই রকম। এখানকার বাসিন্দা মোটে ৩২০ জন। এর মেয়র আলবের্তো প্রেইওনি বলেন, ‘গ্রামের জনসংখ্যা বাড়াতে তিনিও লোকানার কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’