৭ দফা দাবিতে চুয়েট শিক্ষার্থীদের ক্লাশ পরীক্ষা বর্জন

6

রাউজান প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আবাসিক হলগুলোতে করোনা সংক্রমণের মাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এছাড়া অনেকেই করোনা লক্ষণ নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় হলে অবস্থান করছে। এমতাবস্থায় চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা গতকাল রবিবারের (১৬ জানুয়ারি) নির্ধারিত পরীক্ষা বর্জন করেছে। এর মধ্যে ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি থেকে যথাক্রমে তৃতীয়, দ্বিতীয় ও প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হওয়ার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে । সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে ৭ দফা দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে চুয়েটের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। চুয়েটের শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, উপাচার্য তাদের দাবিগুলো মেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হল- ১.শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রম কোনোভাবেই আর বিলম্বিত করতে চাইনা। অফলাইন পরীক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় অনলাইনে পরীক্ষা নিতে হবে এবং যত দ্রæত সম্ভব চূড়ান্ত বর্ষের লেভেল ৪ টার্ম ১ এর অবশিষ্ট চারটি পরীক্ষা রিশিডিউল এবং লেভেল ৪ টার্ম ২ এর পরীক্ষাসমূহের শিডিউল ঘোষণা করতে হবে। তৃতীয় বর্ষের লেভেল ৩ টার্ম ২, দ্বিতীয় বর্ষের লেভেল ২ টার্ম ২ এবং প্রথম বর্ষের লেভেল ১ টার্ম ২ এর পূর্বের শিডিউলকৃত পরীক্ষার অনলাইনে যথাযথ ডিএল সহ রিশিডিউল করতে হবে। তবে ১৭, ১৮, ১৯ ব্যাচসমূহের যথাক্রমে ৩-২ টার্ম, ২-২ টার্ম, ১-২ টার্মের পরীক্ষা গ্রহণ না করেই পরবর্তী টার্মের ক্লাস শুরু করার নির্দেশ দেয়া যাবে না।
২.সকল ব্যাচের চলতি লেভেলের টার্ম ফাইনাল শেষ হওয়ার সাথে সাথেই অনলাইনে বিভিন্ন বর্ষের শর্ট/সেলফস্টাডি পরীক্ষা নিতে হবে।
৩. উপরে উল্লেখিত সকল পরীক্ষার শিডিউল-একাডেমিক ক্যালেন্ডার আকারে আগামী দুই কার্যদিবস অর্থাৎ ১৮ জানুয়ারির মধ্যে অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে।
৪. অনলাইন পরীক্ষা চলাকালীন কোনো শিক্ষার্থী কোভিড সংক্রমিত হলে তিনি/ তারা যদি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অপারগ হন তবে তাকে/তাদেরকে অকৃতকার্য হিসেবে গণ্য করা যাবে না, বরং তার/তাদের জন্য পরবর্তীতে সেফস্টাডি পরীক্ষার সমান্তরাল সময়ে অনুপস্থিত হওয়া পরীক্ষাগুলো আয়োজন করতে হবে যেখানে নিয়মিত পরীক্ষার মত নিরীক্ষণ করতে হবে, শর্ট বা সেফস্টাডির মত নিরীক্ষণ করা যাবে না।
৫.বিদ্যমান কোভিড বাস্তবতার নিরিখে ডিপার্টমেন্টগুলোর এটাচমেন্ট স্বল্পসময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বা এটাচমেন্টের বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
৬.অনলাইন পরীক্ষায় অংশগ্রহণে যাদের ডিভাইসের সংকট থাকবে তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে লোনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭.যদি চট্টগ্রামের করোনা সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে আসে তখন শিক্ষার্থীদের পুনরায় আবাসিক হলে ফিরিয়ে এনে গতানুগতিক অফলাইন পদ্ধতিতে কার্যক্রম শুরু করে দিতে হবে।
এসব দাবিগুলো উল্লেখপূর্বক শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম শিক্ষার্থীদের মাঝে সরাসরি উপস্থিত হয়ে যথাশীঘ্র একাডেমিক কাউন্সিল ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দেন। সে পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
উপাচার্যের আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান এবং আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে তাদের দাবিসমূহ মেনে নেওয়া হবে এমন আশায় তারা হলেই অবস্থান করছেন ।