৫০ বছরে প্রথম সম্মেলন আজ, আসছে ৮ম কমিটি

47

রাহুল দাশ নয়ন

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের রাজনীতির ভিত্তি হয় ১৯৭২ সালে। বিগত ৫০ বছরে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাতটি কমিটি বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু কোন কমিটিই সম্মেলন করতে পারেনি। এবারই প্রথমবারের মতো সম্মেলন করছে টিপু সুলতান ও পার্থ সারথীর নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ জেলা যুবলীগ।
পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আজ অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু এলাকা থেকে পটিয়া পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগিয়েছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ ন ম টিপু সুলতান চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে প্রতিটি উপজেলায় সাংগঠনিক শক্তি বাড়িয়েছি। এখন কেন্দ্রের নির্দেশনায় সম্মেলনের আয়োজন করেছি। দক্ষিণ চট্টগ্রামে যুবলীগের রাজনীতির ইতিহাসে এটি প্রথম সম্মেলন। এ সম্মেলনের মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামে যুবলীগ আরো ঐক্যবদ্ধ হবে। ত্যাগী ও যোগ্যরাই কমিটিতে স্থান পাবেন বলে আশা রাখি।
যুবলীগের নেতারা জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগ গঠিত হয়। সেসময় মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার মৌলভী সৈয়দকে সভাপতি ও বর্তমান দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে প্রথম কমিটি গঠিত হয়। এরপর মোছলেম উদ্দিন আহমদকে সভাপতি ও শফিকুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দ্বিতীয়, শফিকুর রহমানকে সভাপতি ও আবুল কালাম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে তৃতীয়, আব্দুল মান্নান চৌধুরীকে আহব্বায়ক ও ওয়াহিদুজ্জামানকে যুগ্ম আহবায়ক করে চতুর্থ, দেবব্রত দাশকে আহব্বায়ক ও মোছলেম উদ্দিন মনসুর, খোরশেদ আলমকে যুগ্ম আহŸায়ক করে পঞ্চম, ১৯৯৮ সালে মাহফুজুর রহমান মিরুকে আহব্বায়ক, ইউনুস খান জসীম, শাকিল আহমদ চৌধুরী, গোলাম ফারুক ডলার ও আমান উল্লাহ আমানকে যুগ্ম আহব্বায়ক করে ষষ্ঠ কমিটি গঠিত হয়।
সর্বশেষ ২০১০ সালের ৩০ জুন আনম টিপু সুলতান চৌধুরী সভাপতি ও পার্থ সারথী চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে সপ্তম কমিটি (আংশিক) কমিটি গঠিত হয়। যে কমিটি ২০১২ সালের ৫ জুলাই পূর্ণাঙ্গ হয়। এরপর ১০ বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী চৌধুরী বলেন, ১৯৭২ সালে যুবলীগের রাজনীতির ভিত্তি হয় দক্ষিণ চট্টগ্রামে। এরপর কখনো সম্মেলন হয়নি। আমরাই প্রথম সম্মেলন করতে যাচ্ছি। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের যে আগ্রহ, তাতে ধারণা করছি আমরা একটি সফল সম্মেলন উপহার দিতে পারবো।
এদিকে সম্মেলন সফল করতে ১০টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দিদারুল ইসলাম চৌধুরী। যুগ্ম আহব্বায়ক হয়েছেন মোহাম্মদ সোলায়মান চৌধুরী ও রাজু দাশ হিরু। সম্মেলনকে ঘিরে পুরো তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু এলাকা থেকে পটিয়া পৌরসভা পর্যন্ত সর্বত্র সাজ সাজ রব। প্রধান সড়কের দুই পাশে ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের ছবি সম্বলিত বিশালাকার বিলবোর্ড নজর কাড়ছে। ঢাকা থেকে সম্মেলনে যাওয়া নেতারা এ সড়ক ধরেই পটিয়া যাবেন বলে এমন বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় ৫২জন নেতা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে চান। ঢাকায় জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে এমন ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন তারা। পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে পার্থ সারথী চৌধুরী, নাসির উদ্দিন মিন্টু, দিদারুল ইসলাম চৌধুরী, মো. ফারুক, মোহাম্মদ সোলায়মান, আকতার হোসেন, সাইফুল ইসলাম, শফিউল আজম শেফু, রাজু দাশ হিরু, দিদারুল আলম, সোলায়মান তালুকদার, আব্দুল হান্নান লিটন, নুরুল আমিন, এমএ রহিমের নাম শোনা যাচ্ছে।
তবে যুবলীগের একটি সূত্র জানায়, পটিয়ার একজন, সাতকানিয়ার দুইজন ও বোয়ালখালীর একজন পদপ্রত্যাশী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও এই চারজন পদপ্রত্যাশীকে ঘিরে আগ্রহ আছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিলে এ চারজনের যে কেউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হবেন। আবার যদি জমা পড়া বায়োডাটা বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রীয় যুবলীগের দায়িত্বশীল নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন এক্ষেত্রে চমক আসতে পারে।
সম্মেলনে অতিথি যারা : সম্মেলনে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।
প্রধান বক্তা থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি থাকবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি।
বিশেষ বক্তা থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগসহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।