২১ ঘণ্টা পর মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেন ৬ রোহিঙ্গা

12

পূর্বদেশ ডেস্ক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সড়ক থেকে অপহরণের ২১ ঘণ্টা পর ছয় রোহিঙ্গা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের দায়িত্বে নিয়োজিত ১৬ এপিবিএন এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মঞ্জুরুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, বিকালে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার পর সন্ধ্যা ৬ টায় ছয় রোহিঙ্গা হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারক‚ল ২১ নম্বর ক্যাম্পে তাদের নিজেদের ঘরে ফিরেছেন।
ছয়জন হলেন উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারক‚ল ২১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি বøকের বাসিন্দা আমির হাকিমের ছেলে মোহাম্মদ ফরোয়াজ (৩৮),তার ভাই মোহাম্মদ জোহার (৩০), মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ নূর (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে নুরুল হক (৩০), ইউছুফ আলীর ছেলে জাহিদ হোসেন (৩৫) এবং একই ক্যাম্পের সি বøকের আব্দুস সালামের ছেলে মোহাম্মদ ইদ্রিস (১৯)।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মোহাম্মদ বেলাল (৩৫) হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারক‚ল এলাকার জালাল আহমদের ছেলে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে ক্যাম্প থেকে ছয় রোহিঙ্গা কাজের জন্য বের হন। তারা কাঁটাতারে ঘেরা ক্যাম্পের চোরাই পথ দিয়ে বের হয়ে শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কে (কক্সবাজার-টেকনাফ) উঠেন। এক পর্যায়ে উলুবনিয়া স্টেশনে পৌঁছার আগেই অটোরিকশায় একদল দুর্বৃত্ত এসে অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাদের টেকনাফের হ্নীলা এলাকার পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। শনিবার সকালে অপহৃত তিনজনের স্বজনের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
অপহৃতরা ক্যাম্পে ফিরে আসার খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। রাতে ১৬ এপিবিএন এর এএসপি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সময় ভুক্তভোগী ও স্বজনরা তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন’।
সহকারী পুলিশ সুপার আরও বলেন, ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে, সন্ধ্যা ৭ টায় হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারক‚ল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোহাম্মদ বেলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার বেলালসহ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান মঞ্জুরুল ইসলাম।
সা¤প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা শিবির সংলগ্ন এলাকায় অপহরণের ঘটনা বেড়ে গেছে। এসব অপহরণের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের একটি সশস্ত্র অংশ জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, থেকে গত চার মাসে টেকনাফে ৩৫ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। খবর বিডিনিউজের
সবশেষ ৭ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার ক্ষেত থেকে চার কৃষককে অপহরণ করা হয়। তাদের পরিবার অভিযোগ করে, এর পেছনে রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা রয়েছে। তিন দিন পর ১০ জানুয়ারি তিন কৃষক এবং ১১ জানুয়ারি আরও কৃষক মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসে বলে তাদের পরিবারের বরাতে জানান হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
এর এক সপ্তাহের মাথায় আবার ছয় রোহিঙ্গাকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা সামনে এলো।