নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেশিরভাগ রোগীই হালিশহর, বন্দর, নিমতলা, ও আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, এসব এলাকায় সরবরাহকৃত ওয়াসার পানি থেকে রোগের জীবাণু ছড়াচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি ৩০ শতাংশ রোগীই কলেরায় আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই পানিশূন্যতায় ভুগছেন। গরমের কারণে কোনো খাবার কিংবা পানি থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২৭ জন। এই পর্যন্ত গত ৭ দিনে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬১৬ জন। এছাড়া গত একমাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬ জন।
ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে নতুন করে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ২৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ৩৯ জন। বর্তমানে সবমিলিয়ে বিআইটিআইডিতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৮ জন রোগী।
বিআইটিআইডি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ বলেন, গত দুই সপ্তাহের মধ্যে যেসব ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের বেশিরভাগেরই বসবাস হালিশহর, বন্দর, নিমতলা ও আনন্দবাজার এলাকায়। ওই এলাকার পানিতে কোনো সমস্যা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছে এদের প্রত্যেকে ব্যাকটেরিয়াল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে অনেকের বমি, জ্বর ও পানিশূন্যতা বেশি। তাই বাইরের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে।
একইভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জনের অধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছেন ডায়রিয়ার রোগী।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ডায়রিয়া নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক সর্তক আছি। আর জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। তাই প্রস্তুত আছে ২৮৪ জনের চিকিৎসক টিম। তাছাড়া সচেতনতা বাড়াতে উপজেলায় প্রচার প্রচারণা চালানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
