হাটহাজারীতে যুবকের লাশ উদ্ধার

16

হাটহাজারী প্রতিনিধি

পরিবারের পছন্দে বিয়ে করেন প্রবাসীকে। কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে পরকীয়ায় জড়িয়ে প্রবাসী স্বামীর ঘর ছেড়ে সবুজ বিশ্বাসের (২৬) হাত ধরে পালিয়েছিলেন গৃহবধূ। এরপর ওই যুবককে ‘বিয়ে’ করেন। কিন্তু সুখী হতে পারলেন না রাউজানের গহিরা নোয়াজিষপুরের চৌধুরীবাড়ির গণি মিয়ার মেয়ে ফারজানা ববি (২৬)। তিনি দুই সন্তানের জননী।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নের মুনিয়া পুকুর পাড় এলাকার এনায়েতপুরের দিদারুল আলম নামে এক ব্যক্তির মার্কেটের ৩য় তলার ভাড়াবাসা থেকে সবুজের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার জন্মস্থান খুলনা জেলার তেরোখাদা উপজেলার পূর্ব কাটেংগা। এছাড়া ঢাকার ঠিকানা- দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন খিলগাঁও সি ব্লক। তার পিতা আবদুল হান্নান বিশ্বাস পেশায় কৃষক। সবুজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে বছর খানের আগে একটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরিতে যোগ দেন।
ফারজানা ববি জানান, তার প্রথম স্বামী রাউজান গহিরা নোয়াজিষপুরের আবদুল মজির সুকানীর বাড়ির প্রবাসী মো. আসলাম। তার সাথে সংসার করা অবস্থায় ১১ মাস আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় সবুজ বিশ্বাসের সাথে। এরপর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিয়ের আশ্বাসে তিনি ৭ বছর বয়সী আয়ান এবং ৩ বছর বয়সী আফরা নামে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে সবুজের সাথে সংসার শুরু করেন। গত ২৮ জুন সবুজ তাকে নিয়ে হাটহাজারীর মুনিয়া পুকুর পাড় এলাকায় এসে ভাড়া বাসায় উঠেন।
তিনি আরও জানান, নিকাহ্নামা নিবন্ধন করা নিয়ে সবুজের সাথে ঝগড়া চলছিল। গত ২৯ জুলাই কলহের জেরে তিনি এক আত্মীয়ের বাসা চলে যান। গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় আবদুর রহিম, মো. নাছির ও খালাতো বোন মুন্নিকে নিয়ে বৈঠক হয়। এ সময় স্ত্রী ও স্থানীয়দের চাপে সবুজ প্রতিজ্ঞা করেন মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে স্ত্রীর হাতে নিকাহ্নামা বুঝিয়ে দিবেন। এ সিদ্ধান্তের পর তিনি আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। ওই সময় স্বামী বাসায় একা ছিলেন। পরে গতকাল তিনি জানতে পারেন সবুজ বাসার রান্নাঘরে ‘আত্মহত্যা’ করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের গলায় ফাঁস ও বাম চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুটি রহস্যজনক।
সবুজের ছোটভাই শাহেদ বিশ্বাস ও বোন শিফা বিশ্বাস জানান, তাদের ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। ভাইয়ের বিয়ের বিষয়টি তাদের অজানা। এ ঘটনায় তারা ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।