হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন চান আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা

11

চবি প্রতিনিধি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন চেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আওয়ামীপন্থী হলুদ দলের সমর্থক শিক্ষকবৃন্দ। এ নিয়ে তারা দলটির আহব্বায়ক বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেছেন। চিঠিতে হলুদ দলের মোট ২০১ জন শিক্ষক সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। গতকাল শনিবার চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির আহবায়ক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী।
আহবায়ক বরাবর পাঠানো এ চিঠিতে বলা হয়, স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠিত হয় দুই বছরের জন্য। সে হিসাবে ২০১৭ সালে নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ ২০১৯ সালেই শেষ। পাশাপাশি নির্বাচিত ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জন সদস্য অবসর গ্রহণ, লিয়েন, শিক্ষা ছুটি প্রভৃতি কারণে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না । অপরদিকে অনেক নবীন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন যাদের প্রায় সবাই হলুদ দলের ভাবাদর্শী।
মনোনয়নে দলীয় পছন্দের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না অভিযোগ তুলে চিঠিতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটি হলুদ দলের বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের কোন ভাবেই প্রতিনিধিত্বশীল নয়। যার প্রমাণ সা¤প্রতিক সময়ে তাদের দেয়া মনোনয়নের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর নির্বাচনে ভরাডুবি। অনেক প্রার্থী স্ট্যান্ডিং কমিটির পছন্দের প্রার্থীর বিরোধিতা করেও জয়লাভ করেছেন। যা প্রমাণ করে এই কমিটির প্রতি সাধারণ সদস্যদের আস্থা নেই।
চিঠিতে আরো বলা হয়, আগামী বছরের শেষের দিকে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। দেশে বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতসহ ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য পুনরায় নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। এদের সাথে পাকিস্তানসহ প্রতিক্রিয়াশীল বিদেশী শক্তিও সক্রিয় রয়েছে। এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আদর্শিক শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য প্রয়োজন আস্থাশীল নতুন কমিটি।
এ ব্যাপারে হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির বর্তমান সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তারা নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত প্রার্থী বিভিন্ন পর্ষদে মনোনয়ন দিয়েছেন। লজ্জার ব্যাপার হলো তারা যাদের মনোনয়ন দিয়েছেন তাদের অধিকাংশেরই হার হয়েছে। যা প্রমাণ করে এই কমিটির উপরে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের আস্থা নেই। সামনে অনেকগুলো পর্ষদের নির্বাচন হবে। মেয়াদহীন স্ট্যান্ডিং কমিটি যদি সেখানেও খামখেয়ালিভাবে মনোনয়ন দেয় তাহলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। তাই দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য আমরা আহবায়ককে চিঠি দিয়েছি।
চিঠিতে স্বাক্ষর করা আরেক শিক্ষক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, ২ বছরের কমিটি ৫ বছর ধরে চলছে। নতুন অনেক শিক্ষক এসেছে যারা আওয়ামী ভাবাদর্শের। তাদের সাথেও এই কমিটির সমন্বয় নেই। তাছাড়া এই কমিটির ৬ জনই এখন দায়িত্ব পালন করেন না। তাই নির্বাচন হওয়া জরুরি।
এ ব্যাপারে স্ট্যান্ডিং কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ‘চিঠি আমি পেয়েছি। নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে আমাদেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে সদস্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। স্বাক্ষরকারী ২০১ জনের কয়েকজন আমাদের সংগঠনের নয়।’
প্রসঙ্গত, স্ট্যান্ডিং কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো আদর্শিক দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদ। প্রতি ২ বছর পর পর এর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আওয়ামীপন্থী হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৭ সালে।