স্বামীর অকথ্য নির্যাতনের অভিযোগ ৩ মাসের সন্তানসহ ৪ দিন ধরে নিখোঁজ গৃহবধূ

6

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি
আত্মীয়তার সুবাধে নোয়াখালীর মো. ছাবের আহম্মদের এইচএসসি পড়–য়া মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৯) এর সাথে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পূর্ব কোদালার সন্দীপ পাড়ার আহম্মদ ছাফার ছেলে বদিউল আলমের বিয়ে হয় ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর। বিয়ের পর গত ৩ মাস আগে তাদের সংসারে আসে ছেলে সন্তান। সেই সাজানো সংসারে হঠাৎ-ই যেনো ছন্দপতন ঘটে একটি ফোনে। গত ২ ডিসেম্বর মুঠোফোনে ফারজানার বাবাকে ফোন করেন ফারজানার স্বামী বদিউল; জানায়- ফারজানা ঘর থেকে বের হয়ে গেছে। কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর অসহায় অনেকটাই অসহায়ের মতো এদিক-ওদিক খোঁজাখুঁজি করেও ফারজানাকে পাননি ছাবের আহম্মদ। দুই পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের বাসায়ও মেলেনি খোঁজ। বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েকে জীবিত উদ্ধারের জন্য। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার ৪ দিন পরও খোঁজ মেলেনি ফারজানার।ছাবের আহম্মদ ‘যৌতুকের দাবি মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় দিদার ও তার মা-বোন নিযার্তন করে ফারজানাকে হত্যা করে লাশ গুম’ এর অভিযোগ আনেন থানায় দায়ের করা অভিযোগনামায়।
এদিকে ফারজানা নিখোঁজের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। থানায় দায়ের করা অভিযোগসূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর সেনবাগের ৮নং কাজিরখীল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মো. ছাবের আহম্মদের এইচএসসি পড়–য়া মেয়ে ফারজানা আক্তারের (১৯) সাথে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পূর্ব কোদালার সন্দীপ পাড়ার আহম্মদ ছাফার ছেলে বদিউল আলমের সাথে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় একটি ছেলে সন্তান যার বয়স এখন ৩ মাস। বদিউল আলম ফারুক স্থানীয় একটি টেইলার্সের দোকানে কাজ করেন। গত ২ ডিসেম্বর সকাল থেকে ঘরে ফারজানা ও তার ৩ মাসের শিশু সন্তানকে পাওয়া যাচ্ছে না- শ্বশুরকে মুঠোফোনে এমন সংবাদ জানায় বদিল আলদ ফারুক। এরপর ফারজানার বাবা তাদের সব আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খোঁজ করেও পাননি ফারজানার হদিস। কোথাও সন্ধান না পাওয়ায় তিনি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, বিয়ের পর থেকে ফারুক ফারজানাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতো। ফারুকের মা ও বড় বোন স্বামী পরিত্যক্তা সাহেদা আক্তার প্রায় সময় ফারজানাকে নির্যাতন করতো। মুঠোফোনে মেয়ের সাথে কথা বলতে দিত না। আমরা সব সময় ফারজানাকে নিয়ে চিন্তায় থাকতাম। আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি ফারুক ২ ডিসেম্বর সকালে ফারজানা ঘুম থেকে দেরীতে উঠায় এবং শ্বশুড়কে বাবাকে সকালের নাস্তা না দেয়ার অভিযোগে ব্যাপক মারধর করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ফারজানা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তারপর থেকেই আমার মেয়ে নিখোঁজ। আমরা ধারণা করছি তারা আমার মেয়েকে গুম করে রেখেছ। আমি আমার মেয়েকে জীবিত উদ্ধারের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই মো. আরিফ জানান, আমরা মঙ্গলবার (গতকাল) সকালে সরেজমিনে বদিউল আলম ফারুকের বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করে এসেছি। সবার সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে বলে এসেছি আগামি ৩ দিনের মধ্যে ফারজানাকে জীবিত উদ্ধারের জন্য। না হলে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ফারজানাকে গুম করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি জানান, স্বামীর যৌতুক ও শারিরীক নির্যাতনের কারণে ফারজানা নিখোঁজের কারণ হতে পারে।
কোদালা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কোব্বাদ মেম্বার জানান, উভয়ে আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হয়। কি কারণে ফারজানা নিখোঁজ জানি না। তবে ফারজানাকে উদ্ধারের জন্য ফারুকের পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করেছি। আশা করি সহসাই ফারজানাকে উদ্ধার করতে পারব।