স্থাপনের সময় তিন কর্মচারীসহ ৩ গার্ডার খালে

5

শিকলবাহা কালারপুল সেতুর পিলারের উপর গার্ডার স্থাপনের সময় ৩ কর্মচারীসহ ৩টি গার্ডার পড়ে গেল শিকলবাহা খালে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় ক্রেনের তার ছিড়ে আগে স্থান করা অন্য গার্ডারের উপর পড়লে সেখান থেকে আরো দুটিসহ মোট তিনটি গার্ডার খালের মাঝে পড়ে যায়। ওই সময় সেতুর কাজে নিয়োজিত ৩ কর্মচারীও খালে পড়ে যান। তবে, এই ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। খালে পড়ে যাওয়া মোহাম্মদ রবিউল (৩০), মোহাম্মত মফিজ (২৮) ও ফেরদৌসকে (৪০) স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, কালারপুল সেতুর কারণে ১৪ বছর ধরে স্থবির শিল্পকারখানা ও সাত ইউনিয়নের লোকজনের জীবনযাত্রা। ২০০৭ সালে একটি মিলের মালবাহী বার্জ্যরে ধাক্কায় সেতুটি ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই অশুভ পিছু ছাড়ছে না সেতুটির। ওই সেতুর কারণে গত ১৪ বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কালারপুল সেতুর উপর নির্ভরশীল শিল্পকারখানা, পটিয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, বয়স্ক ও শিক্ষার্থীসহ সাধারণ লোকজনের। সেতুর অভাবে নদী পথে পার হতে গিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ২০০৭ সালে সেতু বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই প্রতিবাদী জনতা-পুলিশ মুখোমুখি সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠলে সড়ক বিভাগসহ ১/১১ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর তাৎক্ষণিক ঘটনালে উপস্থিত হয়। তারা অতি অল্প সময়ের মধ্যে পিলার সেতু নির্মাণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। কিন্তু গত ১৪ বছর পার হলেও এ অবস্থা থেকে এখনো কোনো উন্নতি ঘটেনি। দীর্ঘ সময় পর সেতুর কাজ শুরু হলেও ঠিকাদার সময়ক্ষেপন করার কারণে শুধুমাত্র গত ৫টি বছর নষ্ট হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ শিকলবাহা খালের ওপর কালারপুল বেইলি সেতু নির্মাণ করে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ছিল ৫৭০ ফুট ও প্রস্থ ১২ ফুট। এরপর ২০০৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসে একটি মালবাহী বার্জের আঘাতে সেতুটির একাংশ বিধ্বস্ত হয়। ২০১৩ সালে চার কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি সংস্কার করা হয়। ২০১৪ সালে এটি উদ্বোধন করেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর নামে সেতুটির নামকরণ করা হয়। পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ও কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়ন সীমান্তে এই সেতুটি। বর্তমানে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে প্রায় ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ চলছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর ৪ পার্টের পশ্চিমাংশের দ্বিতীয়টিতে গার্ডার বসানোর সময় শ্রমিকসহ শিকলবাহা খালে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সেতুর গার্ডার সেন্টার পয়েন্টে বসানোর সময় অতিরিক্ত ভারী হওয়ার কারণে তা খালের পানিতে ডুবে রয়েছে।
কোলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ নুর জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন সেতুর গার্ডার বসানোর সময় ৩টি খালে পড়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন তিন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে। এটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে কোলাগাঁও, হাবিলাসদ্বীপ, জিরি, কুসুমপুরা ও পশ্চিম পাড়ের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়বে।
তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) এর দোহাজারীর নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষযে তাকে কেউ অবগত করেননি। তিনি এ বিষয়ে এখনো কিছুই জানেন না।