সোশ্যাল মিডিয়ায় যতকথা

10

এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের করণীয়

অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী

প্রিয় পরীক্ষার্থীরা,
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে শুরু তোমাদের শিক্ষাজীবনের গুরত্বপূর্ণ এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা। এ পরীক্ষার সাফল্যের ওপর নির্ভর করে তোমরা পরবর্তীতে কোনদিকে এগুবে। তাই এ পরীক্ষায় ভালো করতে হলে ভালো প্রস্তুতির পাশাপাশি আনুষঙ্গিক আরো কিছু বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি। পরীক্ষা ঘিরে তোমাদের সামগ্রিক প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত এ বিষয়ে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মূল্যবান পরামর্শ পেশ করছি।
১. সুস্থ দেহ সুস্থ মন। এখন থেকে পরীক্ষা চলাকালীন পর্যন্ত তোমাদের সুস্হ থাকতে হবে। তাই বেশি পড়তে গিয়ে খাওয়া- দাওয়া ও ঘুম ছেড়ে দিলে চলবে না। ২. পড়াশোনায় সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। এখন আর কোনোভাবেই সময় নষ্ট করা যাবে না। ৩. এ মুহুর্তে অধিক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা না করাই ভালো। কারণ অধিক রাত পর্যন্ত জাগলে শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে। ৪. কোনো নতুন প্রশ্ন এখন আর না পড়ে ইতিমধ্যে পড়া প্রশ্নগুলো ভালোভাবে রিভিশন দিতে হবে। ৫. বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের লাইন বাই লাইন ভালো করে রিডিং পড়তে হবে। ৬. যদি কোনো অধ্যায় সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকের কাছে থেকে সেটা বুঝে নিতে পার। ৭. মানসিক সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কারণ মানসিক টেনশন তোমাদের প্রস্তুতিতে বিঘœ ঘটাতে পারে। ৮. প্রতিটি বিষয়ের বিগত সালের বোর্ড প্রশ্নগুলো সমাধান করে ফেলতে পার। এতে তোমাদের পরীক্ষাভীতি অনেকাংশে কেটে যাবে। ৯. বিনোদনের জন্য সামান্য খেলাধুলা করা যেতে পারে। তবে শরীরের অতিরিক্ত শক্তি ক্ষয় হয় এমন খেলাধুলা না করাই ভালো। ১০. বাকি সময়টুকুতে কোনোমতেই মোবাইল, টেলিভিশন বা ইন্টারনেটের সামনে বসে সময় নষ্ট করবে না।

গণপরিবহনের ভাড়া বাড়লে আর কমে না কেন?

আজহার মাহমুদ

করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় সাধারণ মানুষের যে ক্ষতিটা হয়েছে সেটা কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছে না। সবকিছুতেই যেন আগুণ। করোনার আগে একজন মানুষের জীবিকা নির্বাহ করতে যে খরচ হতো এখন তার দ্বিগুণ খরচেও হচ্ছে না। কিন্তু করোনা এখন নিয়ন্ত্রণে। অজুহাত তাহলে কি দেওয়া যায়? অজুহাত একটা কিন্তু আছে। যুক্তরাষ্ট্র আর ইউক্রেন যুদ্ধ। আবার কখনও তেলের দাম বাড়ার অজুহাতেও সবকিছুতে আকাশ ছোঁয়া দাম বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষের দুঃখটা সেখানে না। সাধারণ মানুষের দুঃখ হচ্ছে দাম বাড়লে সেটা আর কমে না কেন? বিশ্ববাজারে দাম বেড়েছে, বাংলাদেশেও বেড়েছে। সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে আর দাম কমে না। একই দূরত্বের ভাড়া করোনার আগে ছিলো ৫ টাকা। এরপর করোনায় হয়েছে ৭ টাকা। আর এখন ১০ টাকা। এইযে বাড়ছে এটা বাড়তেই থাকে। করোনার আগ পর্যন্ত চট্টগ্রামে টেম্পুতে উঠানামা ছিলো ৫ টাকা। এপর সেটা করেছে ৮ টাকা, আর এখন ১০ টাকা। ১০ টাকার ভাড়া হয়েছে ১২ এরপর ১৫। যেভাবে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেভাবে কি সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি হচ্ছে?
মাস শেষে বেতন-বোনাসের পরিমাণ সেই আগের অবস্থায় রয়েছে। অথচ দেশের সবকিছুতেই দাম এখন দিগুণ। আয় তো বাড়েনি, অনেক কোম্পানিতে উল্টো বেতন কমিয়েছে। অনেকের আবার কর্মসংস্থানও নেই। এতোকিছু মধ্যেও গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ার প্রতিযোগিতা। অফিসে যাওয়া-আসা, স্কুলে যাওয়া-আসা, বাজারে যাওয়া-আসাতেই বেতনের অর্ধেক চলে যায়। একজন দিনমজুর বলেন, বাজারে যাওয়া-আসার ভাড়াতেই বাজারের টাকা শেষ হয়ে যায় আমাদের। এভাবে গণপরিবহনের ভাড়া থাকলে সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করা অধিক কষ্ট হয়ে যাবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন জনতার অন্যতম দাবি গণপরিবহনের দ্বিগুণ ভাড়া প্রত্যাহার করা। সবার একটাই কথা, যেভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে সেভাবে তো বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি। এ বিষয়ে বিআরটিএ, সড়কমন্ত্রী কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। এভাবে দিন চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ ধৈর্য হারিয়ে ফেলবে। প্রশাসনের টনক না নড়লে এই সেক্টরের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা দিন দিন বেড়েই যাবে।
আমরা আসলে পরিবহণ শ্রমিকদের নিকট একপ্রকার জিম্মি। আমাদের অফিসে যেতে হবেই। নয়তো পরিবার, সংসার চলবে না। অফিসও এতোকিছু বুঝবে না। অফিসে না গেলে চাকরিটাই চলে যাবে। তাই কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে সব মেনে নিতে হচ্ছে। আমরা সবাই জেনে-বুঝে এই অনিয়মের মধ্যেই জীবন-যাপন করছি। যতদিন সরকারের এই বিষয় নিয়ে টনক নড়বে না ততদিন এমন ভোগান্তি আর দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল করতে হবে। পরিশেষে বলতে চাই, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের একটাই চাওয়া গণপরিবহনের ভাড়া আগের মতো করা হোক। তাঁরা পারছে না দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে। এই দ্বিগুণ ভাড়া প্রত্যাহার করে জনমনে একটু স্বস্তি এনে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।