সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব সময় সতর্ক থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

19

পূর্বদেশ অনলাইন

সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব সময় সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) ৮১তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের রাষ্ট্রপতি প্যারেড অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি ৮১তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

নবীন সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়েই নবীন ক্যাডেটদের হাতে দায়িত্ব পড়ল, তোমরা দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।

এ দায়িত্ব পালনে সব সময় সজাগ থাকতে হবে, প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে একমাত্র পেশাগত ব্রত।

সরকারপ্রধান বলেন, একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এ স্বাধীনতা। কাজেই এ স্বাধীনতার চেতনাকে সব সময় সম্মুন্নত রাখতে হবে।

এ আদর্শ নিয়েই নিজেদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
বাইরের শত্রু মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, জাতির পিতা আমাদের যে পররাষ্ট্র নীতি দিয়েছেন- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়- আমরা সেই পররাষ্ট্র নীতিতেই বিশ্বাস করি। কিন্তু কখনো যদি আমরা কোনো বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হই, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সক্ষমতা আমরা এরই মধ্যে অর্জন করেছি।

পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের সন্তান হিসেবে এদেশের মানুষের পাশে থাকতে হবে। জনগণের সব প্রয়োজনে তোমাদের দায়িত্বপালন করতে হবে এবং সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সব সময় যে কোনো দুর্যোগ ও দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করেছে। আমি যখন বিদেশে যাই, সবাই যখন প্রশংসা করে, গর্বে আমার বুকটা ভরে যায়। এ সুনাম ধরে রাখতে হবে।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণ সমাপ্তির এ মহতী লগ্নে আমি স্মরণ করছি আমার ভাই শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালকে। সিনিয়র টাইগার তথা প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন গর্বিত অফিসার হিসেবে সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। আমার আরেক ভাই শহিদ লেফট্যানেন্ট শেখ জামাল ব্রিটিশ রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি স্যান্ডহার্স্ট থেকে কমিশন লাভ করে সেনাবাহিনীর জুনিয়র টাইগার তথা দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দিয়েছিল। ১০ বছরের শেখ রাসেলও বড় হয়ে আর্মি অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখত। সেদিক থেকে আমিও সেনাপরিবারের একজন গর্বিত সদস্য।

আধুনিক ও দক্ষ সশস্ত্র বাহিনী গড়তে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির সুনাম, সমৃদ্ধি ও মর্যাদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য দোয়া করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।