বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু আজ

23

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াওয়ের প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা মালিক সমিতি কার্যালয়ে গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের জরুরি সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের আহŸায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু। এ সময় গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, রবিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে এই ধর্মঘট চলবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। ঐক্য পরিষদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে বিনা মামলায় যখন তখন সড়ক পরিবহনে কর্মরত লাইনম্যান, শৃঙ্খলাকর্মী, শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তার ও মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে মামলায় অভিযুক্ত করে হয়রানি বন্ধ করা, আটক শ্রমিক নেতা মো. শফির মুক্তি, চুয়েটে সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে সড়কে নৈরাজ্য বন্ধ, জিম্মায় থাকা বাসসহ তিনটি বাস রাস্তার উপর এনে পুড়িয়ে ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি ও গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার জন্য সড়ক অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ক্ষতিপূরণ প্রদান, সড়ক মহাসড়কে চলাচলরত নিষিদ্ধ অবৈধ গাড়ি বন্ধ করা, সড়ক দুর্ঘটনা পরবর্তী প্রভাবশালী ব্যক্তিদের স্থানীয় প্রভাবে পরিবহন শ্রমিক ও গাড়ি আটক করে হয়রানি, নির্যাতন এবং আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে গাড়ি আটক করে টাকা আদায় বন্ধসহ সড়কে যানমালের নিরাপত্তা দেয়া।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রবিবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও অটোটেম্পু চলাচল বন্ধ থাকবে। তাছাড়া দূরপাল্লার কোনো বাস এসব জেলা ও মহানগর থেকে ছাড়বে না এবং ঢুকতেও পারবে না। মালিক-শ্রমিকদের স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে ধর্মঘট সফল করার আহŸান জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ওয়েবিল চেকার-লাইনম্যানসহ পরিবহন শ্রমিকদের র‌্যাবের গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট আহŸান করা হয়েছিল। এর মধ্যে চুয়েটের উদ্ভ‚ত পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার দুপুরে ঐক্য পরিষদ জরুরি সভায় বসে। সভা থেকে চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ৪-৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি নিবন্ধিত ছিল কি না, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তিনজন একইসঙ্গে মোটরসাইকেলে ওঠার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না ও তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না- এসব বিষয় তদন্ত কমিটি গঠন করে তুলে আনা। আর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে মে দিবসের পর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। একইসাথে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। তাদের কারণে আমাদের শ্রমিকরাও অনিরাপদে থাকে।
সভায় কফিল উদ্দিন আহমদ, মৃণাল চৌধুরী, মোরশেদুল আলম কাদেরী, মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী, মো. আহসান উল্লাহ হাসান, নুরুল আবছার, নুরুল ইসলাম, জাফর উদ্দিন চৌধুরী (ভিপি জাফর), আবুল কাসেম, মো. শাহ আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহাজাহান, মো. শওকত আলী, আবুল কালাম আবু, জহিরুল ইসলাম, অলি আহমদ, মনছুর আলম, ফারুক খান, জাফর আলম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।