সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রতিক্রিয়া

9

নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল শনিবার থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে জ্বালানি তেলের দাম ৪০-৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন দামে লিটার প্রতি ডিজেল ৮০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা, কেরোসিন ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা, অকটেন ৪৬ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হবে। হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে বিপাকে সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
আব্দুর রব হোসাইন নামে একজন ফেসবুকে লিখেন- ‘রাত ১২টা থেকে অকটনের দাম প্রতি লিটার ৮৯ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা কেউ যদি গালি নিয়ন্ত্রণের বান না মারত উড়াই ফেলতাম’। ইমন রহমান নামে আরেকজন লিখেন- ‘৪২ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল: ২০১৪ সাল থেকে জ্বালানি তেলের দাম পড়তে শুরু করে। ২০২০ সালে সেটা নামতে নামতে ব্যারেল প্রতি ২০ ডলারে এসে দাঁড়ায়। লোকসানি প্রতিষ্ঠান বিপিসি এ সাত বছরে লাভের মুখ দেখে। তাদের লাভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কোথায়?’
মিজানুর রহমান নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন- ‘মেজাজটা এতোই খারাপ হচ্ছে- ভর্তুকি নিয়ে যেভাবে মনিটাইজেশন হচ্ছে- ভর্তুকির টাকা যেনো কারো বাপের সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে কিংবা বিক্রি করে টাকা দিচ্ছে। ওটাও রাষ্ট্রীয় টাকা এবং জন-মানুষের কর দেওয়া টাকা। ২০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে বছরে যদি ৩০-৪০ শতাংশ খরচ নিয়ন্ত্রণ কর যায় সেটাই সঠিক পদ্ধতি। এখন প্রশ্নই উঠছে ভর্তুকির টাকা কোন সেক্টরে কিভাবে খরচ করে সেটার হিসাব দিতে। ব্যারেল প্রতি ১৩০ ডলার ক্রুডে ওয়েল কিনলে দাম পড়ত ৭০ টাকা। ৯০ ডলার কিনলে ৫৪ টাকা। মানুষ স্বাভাবিক আন্তর্জাতিক বাজার দর জানে। বাকী টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হয় সেটার হিসাব দেওয়া উচিত। ভর্তুকি গল্প করে টাকা তো কুয়াশায় হারিয়ে যাচ্ছে না কে বলল?’
শরিফ আহমেদ নামে একজন লিখেন- ‘যে বা যারা তেলের দাম বাড়িয়েছে তারা দেশদ্রোহী। গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বন্ধ ঘোষণা গণপরিবহন। সবকিছুর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ঘাড়ের উপর’। এন এম নাসির উদ্দীন লিখেন- ‘হুট করে জ্বালানি তেলের দাম ৪০/৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়ায় জনগণের মাথায় হাত।
জোবায়ের চৌধুরী নামে একজন লিখেন- ‘আপনারা যারা বিশ্ববাজারের সঙ্গে জ্বালানী তেলের দাম সমন্বয়/অন্যান্য দেশের সঙ্গে দামের তুলনা দিয়ে সাফাই গাইছেন, তাদের কাছ থেকে কী তেলের দাম কম রাখা হবে? এবারের হিসেবটা মানুষের জন্য বেশি কঠিন হয়ে গেল। দেয়ালে পিঠ একদম ঠেকে গেছে’। আবু রায়হান নামে একজন লিখেন- ‘বিশ্ববাজারের সাথে তেলের দাম সমন্বয় করছে ভাল কথা। এবার তেলের দামের সাথে মানুষের বেতনও সমন্বয় করুক’।
তারেক হাসান নামে একজন লিখেন- ‘রাস্তায় প্রচুর সিএনজি চালিত গাড়ি দরকার। আর ডিজেল চালিত গাড়ি আমদানি ও ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দরকার। ডিজেল চালিত গাড়ি রাস্তায় না থাকলে, ডিজেলের চাহিদা কমবে। আর ডিমান্ড কমলে অটোমেটিক দাম নেমে আসবে’। মো. ইসলাইল নামে একজন লিখেন- ‘পদ্মাসেতুর সুনাম জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধিতে ¤øান হয়ে গেল। সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে গেল’।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে কৃষকরাও। তারা বলছেন, তাদের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তারা জানান, তেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন কীভাবে করব? বাজারে ফসল বিক্রি করতি গেলে দাম পাবো না। ঘর থেকে টাকা নিয়ে যা খরচ করবো তাও তো উঠবে না। কিছু মুনাফাকারী লোকের জন্য চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী, কিন্তু ধানের বাজার ঊর্ধ্বমুখী না। এতে তো চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার যদি মনে করে চাষিদের বাঁচাবে, তাহলে বাঁচাতে পারে। আর যদি সরকার মনে করে কৃষক দরকার নাই, তাহলে নাই। ক’দিন আগেই সারের দাম বাড়লো, এখন আবার তেলের দাম বাড়াইলো। আমরা তো কোনো অন্য উপায় দেখছি না। আমাদের তো ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমরা কীভাবে বাঁচবো। আমাদের তো একটা পথ দেখিয়ে দিবে।