সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়

4

পূর্বদেশ ডেস্ক

সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার উদ্যাগে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কুচকাওয়াজ, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, দোয়া ও মোনাজাত এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও দর্শন ছিল শোষণমুক্ত সমাজ গড়া। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহীদরা রক্ত দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমরা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকি না কেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে হবে উন্নত দেশের কাতারে।

চসিক : বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক ভ‚মিকা থাকলেও পর্যাপ্ত গবেষণা ও প্রচারের অভাবে জনগণের কাছে পৌঁছেনি বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
গত মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন মেয়র।
এ সময় মেয়র বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামে ভূমিকা ঐতিহাসিক। শুধু নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ নয়, স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করতে চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ১৯৬৬ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের ডাকে বিশাল জনসভায় প্রথম জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা কর্মসূচির ঐতিহাসিক ঘোষণা প্রদান করেন। কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। পাকিস্তানিদের ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া অপারেশন জ্যাকপট যার মাধ্যমে পাকিস্তানিদের তিনটি বড় অস্ত্রবাহী জাহাজ পানিতে তলিয়ে যায় তাও পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। তবে, পর্যাপ্ত গবেষণা ও প্রচারের অভাবে চট্টগ্রামের এতসব ঐতিহাসিক ভূমিকা ও অর্জন জনগণের কাছে সেভাবে পৌঁছেনি।
তিনি আরও বলেন, তরুণদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, গবেষণা ও প্রচারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের এই ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা জনতার কাছে ছড়িয়ে দিতে। যে চেতনাকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সে চেতনাকে শাণিত করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে তরুণদের।
এরপর টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান মেয়র। এ সময় চসিক কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধন করেন মেয়র। এ কর্নারে বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি বই- অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন রাখা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর বিখ্যাত সব উক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে দেয়াল। চসিকে আসা সেবাগ্রহীতারা অপেক্ষমান অবস্থায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন নানা কিছু এ কর্নার থেকে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর নেছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সমাজকল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবদুস সালাম মাসুম, নুরুল আমিন, গোলাম মো. জোবায়ের, সলিম উল্ল্যাহ, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, আবদুল মান্নান, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, নূর মোস্তফা টিনু, আনজুমান আরা, ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমি, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. আকবর আলী, ফরহাদুল আলম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা, শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলামসহ সিবিএ নেতৃবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, চসিকের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ।

মহানগর আওয়ামী লীগ : মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, সংকট কাটিয়ে উঠাই আওয়ামী লীগের শক্তি। এই শক্তিতে আওয়ামী লীগ বার বার বিজয়ী হয়েছে।
তিনি পবিত্র রমজানুল মোবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী দলীয়ভাবে সাংগঠনিক স্তরে ইফতার মাহফিল বাতিল করে ইফতার আয়োজনের সমস্ত বাজেট যাতে গরীব রোজাদার মানুষদের মাঝে বন্টন করা হয় সেই নির্দেশনা দেন।
তিনি আরও বলেন, সেবাই ধর্ম। তাই আমাদেরকে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় যে অর্জনগুলো জাতিকে উপহার দিয়েছে, তা যেন আমরা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। আজকে বাংলাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীনরা জমি ও বাসস্থান পাচ্ছে। এইরকম অর্জন পৃথিবীতে কোথাও নেই। এটাই হচ্ছে স্বাধীনতার মহান প্রাপ্তি।
মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পন পূর্বক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি নোমান আল মাহমুদ, উপদেষ্টা শেখ মাহমুদ ইছহাক, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, হাজী মো. হোসেন, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য বখতেয়ার উদ্দীন খান, জাফর আলম চৌধুরী, ড. নিছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু, থানা আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম কায়সার প্রমুখ।