সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে সংশোধন করা যাবে

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধনে ভুল সংশোধনে আর বিভিন্ন কার্যালয়ে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হবে না। সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে ভুল সংশোধন করা যাবে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) মো. রাশেদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী নিবন্ধন তারিখের পরবর্তী ৯০ দিন পর্যন্ত নিবন্ধক সংশোধন করতে পারেন। কিন্তু বর্তমান BDRIS সফটওয়্যারে ব্যক্তির নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা, সন্তানের ক্রম ও অন্যান্য ছোট-খাটো ভুল সংশোধনের জন্য ইউনিয়নের ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ক্ষেত্রে ডিডিএলজি’র (স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক) মাধ্যমে সংশোধন করতে হয়। এটি সময় সাপেক্ষ ও জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সংশোধন প্রক্রিয়া সহজীকরণের লক্ষ্যে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও ছোটখাট ভুল সংশোধনে জনগণ যাতে জনভোগান্তির শিকার না হন সেজন্য এখন থেকে এসকল ভুল সংশোধন সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ই করা যাবে।
প্রসঙ্গত, দেশের সব বয়সী নাগরিকের জন্য জন্মনিবন্ধন প্রযোজ্য। জন্মসনদ হচ্ছে একজন মানুষের জন্ম, বয়স, পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রমাণ। রাষ্ট্র-স্বীকৃত নাগরিকের মর্যাদা ও সবধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে হলে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক। ২০০৪ সালে জন্মনিবন্ধন আইন করা হয়, তা কার্যকর হয় ২০০৬ সালে। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন)-এর আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক রেজিস্ট্রারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান ও জন্মসনদ প্রদান করা হয়।
সর্বশেষ নীতিমালা অনুসারে ৪৫ দিনের ভেতরে শিশুর নতুন জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে কোনো ফি জমা দিতে হবে না। ৪৫ দিনের পর শিশুর ৫ বছর বয়স পর্যন্ত জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে ২৫ টাকা ফি এবং পাঁচ বছরের পরে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে আবেদনকারীকে প্রতিটি জন্মনিবন্ধনের জন্য ৫০ টাকা প্রদান করতে হবে। এই টাকা স্থানীয় সরকার বিভাগ অথবা নিবন্ধকের কার্যালয় গ্রহণ করবে। অথচ সরকারি ফি কতো সেটা জানেন না- অধিকাংশ গ্রাহক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নিচ্ছে ইচ্ছেমতো। সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ মাসের পর মাস ঘুরতে হয় জন্মনিবন্ধন সনদ তুলতে অথবা সংশোধন করতে।
শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাসপোর্ট ইস্যু, বিবাহ নিবন্ধন, সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগ দান, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, আমদানি ও রপ্তানি লাইসেন্স প্রাপ্তি, গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি, ঠিকাদারি লাইসেন্স প্রাপ্তি, বাড়ির নকশা অনুমোদন প্রাপ্তি, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিশুশ্রম প্রতিরোধ ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তিসহ নানা কাজে জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে। এসবের মধ্যে কিছু কাজ জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে করা যায়। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতেই জন্মনিবন্ধন সনদের প্রয়োজন পড়ে। সেই গুরুত্বপূর্ণ জন্মনিবন্ধন তৈরি, সংশোধন, ইংরেজিকরণে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।