শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তদারকি নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারদের প্রশ্ন

6

পূর্বদেশ ডেস্ক

জেলা, উপজেলা ও থানায় শিক্ষা অফিস থাকার পরও কেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বা তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি’। বেসরকারি শিক্ষকরাও এ নির্দেশনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
গত ২৮ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে দেশের সব জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তদারকি/পরিদর্শন কার্যক্রম’ শীর্ষক একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২২-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তদারকি/পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি/পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। খবর বাংলা ট্রিবিউন’র
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পাঠানো গত ১৮ মে’র পত্র অনুযায়ী, দেশের সব জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তদারকি/পরিদর্শন কার্যক্রম’ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয় জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের কাছে। সম্প্রতি জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে দেখা করেছেন সরকারি কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা।
‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম দেখভাল ও মনিটরিংয়ের জন্য সরকারের বিভিন্ন অধিদফতর, সংস্থা, শিক্ষা বোর্ড ও আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থাকতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব ডিসি ও ইউএনওদের দেওয়ার কোনও মানে হয় না। প্রয়োজনে এসব প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা যেতে পারে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা ওই নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি।
ডিসি ও ইউএনওর মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যেও এক ধরনের ‘গুজব’ তৈরি হয়েছে। বেসরকারি অনেক শিক্ষক মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং/গভর্নিং কমিটি উঠে যাচ্ছে। এই দায়িত্ব ডিসি ও ইউএনওদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
বেসরকারি শিক্ষক সংগঠন ‘স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ’ (স্বাশিপ)-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, সরকারের অনেক অধিদফতর, শিক্ষা বোর্ড ও পরিদর্শন অধিদফতর থাকতে হঠাৎ এমন নির্দেশনা কেন, সেটি আমাদের বোধগম্য নয়। জেলা প্রশাসক আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাই যদি এগুলো করে তাহলে অধিদফতর, বোর্ড ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান কী করবে? এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা লিখছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের রুটিন দায়িত্বে থাকা মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির বলেন, এটি ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব সংক্রান্ত বিষয় নয়, মনিটরিংয়ের বিষয়। তবে মনিটরিংয়ের বিষয়েও জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা শিক্ষা অফিস রয়েছে। তারাই মনিটরিং করে থাকে। সব কাজ তো আর জেলা প্রশাসক ও ইউএনওরা করবেন তা নয়। সেটি সম্ভব নয়।