শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমে হ য ব র ল অবস্থা

20

পূর্বদেশ অনলাইন

শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমে হ য ব র ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়হীনতায় উভয় প্রতিষ্ঠানই একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, সময়মতো তালিকা না পাঠানোর কারণে টিকাদান কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষা বিভাগ বলছে, টিকা দেওয়ার দায়িত্ব স্বা স্থ্য বিভাগের। তালিকা পাঠাতে একটু দেরি হলেও টিকাদান কার্যক্রমে তাদের যথাযথ প্রস্তুতি থাকার কথা।

জানা গেছে, গত ১৬ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হয়।

স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট, ফাইজার টিকা প্রয়োগে যথাযথ পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ রাখতে হচ্ছে টিকাদান কেন্দ্র। প্রথমদিকে করোনা টিকা দেওয়ার জন্য ৩টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
নিজেদের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় কার্যক্রম শুরুর একদিন পর একটি কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।

গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, কতজন শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছেন সিভিল সার্জনের কাছে এ তথ্য নেই। চিঠি ছাড়া শিক্ষা বিভাগের কোনও কর্মকর্তার সঙ্গে আমাদের স্ব-শরীরে সাক্ষাৎ হয়নি। শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে যে তালিকা প্রেরণ করা হয় তাও সন্ধ্যার আগে আমাদের হাতে আসে না। ফলে আমাদের যে প্রস্তুতি নিতে হয় তাও নেওয়া যায় না। এছাড়া সর্বশেষ ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাও আমাদের রাত ৯টায় জানানো হয়। ফাইজারের মতো একটি স্পর্শকাতর টিকা যদি এত অল্প সময়ে দিতে হয়, সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর যদি কোনও জটিলতা তৈরি হয় সে দায় কে নেবে?

তিনি বলেন, এমনিতেই আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট রয়েছে। বিভিন্ন নার্সিং কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদের দিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করছি। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা সারাদিন একটি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করার পরও তাদের ন্যূনতম আপ্যায়নটুকু করা হয় না। এর চেয়ে দুখের বিষয় কি হতে পারে!

তবে বিষয়গুলো অস্বীকার করে চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হায়দার হেনরী বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই কার্যক্রম ছাড়াও আমাদের প্রতিদিনের দাফতরিক কাজগুলো করতে হয়। যে কারণে তালিকা পাঠাতে সময় লেগে যাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। সুতরাং তাদের তো আলাদা প্রস্তুতি থাকার কথা। দেরিতে তালিকা গেলেও খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ২১ হাজার ৯২৬ জন শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। এরমধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ১৪ হাজার ৭২৪ জন, আলীম পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৫০০ জন এবং এ লেভেল পরীক্ষার্থী ৫৬০ জন। এছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৫ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে।

গত ১৬ নভেম্বর থেকে নগরের চট্টেশ্বরী রোডের চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল, ইস্পাহানি মোড়ের স্যার মরিস ব্রাউন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং একে খান মোড়ের মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। যদিও বিভিন্ন কারণে ইস্পাহানি উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।