লামায় আ. লীগ নেতা হত্যায় গ্রেপ্তার ২

36

লামা উপজেলার সরই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর সিকদার হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৩ জন ও অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। নিহত আলমগীর সিকদারের ছোটভাই দস্তগীর সিকদার বাদী হয়ে লামা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে প্রধান আসামি সাইমন ত্রিপুরাকে (২৬) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আটকের পর তাকে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ রিমান্ড চাইলে আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, গত ২৩ জুলাই দিনগত রাতে একটি সিন্ডিকেট ভাড়াটিয়া খুনির মাধ্যমে আলমগীর সিকদারকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পরদিন বুধবার ভোরে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় মামলার প্রধান আসামি সাইমন ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই হত্যাকাÐে তারা ৩ জন সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সাইমন ত্রিপুরা। একটি গ্রæপ তাদেরকে ভাড়ায় এনেছে। গ্রেপ্তার সাইমন ত্রিপুরা থানচি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যামনি পাড়ার মনিরাম ত্রিপুরার ছেলে। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবান চিম্বুক থেকে আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি মোটর সাইকেল ও একটি হেলম্যাট এবং দুটি দা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িতদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এদিকে হত্যাকাÐের সাথে জড়িত খুনিরা যাতে বিদেশ পাড়ি জমাতে না পারেন সেদিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
এদিকে, এলাকায় জনপ্রিয়তা ও ভূমি বিরোধকে এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ হিসেবে দেখছেন নিহতের ছোট ভাই ও মামলার বাদী মো. দস্তগীর সিকদার। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমার বড় ভাই এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। আগামী ইউপি নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করার কথা ছিল। এছাড়া সরই আলাদা উপজেলা হলে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার আশা ব্যক্ত করেছিলেন। তাকে সরিয়ে দিতে পারলে অনেকের রাস্তা পরিস্কার হবে এই ধারনা থেকেই হয়তো তাকে হত্যা করা হয়েছে। অপরদিকে আমাদের ভূ-সম্পত্তি বিষয়ে কয়েকজনের সাথে বিরোধ রয়েছে। সেটাও খুনের কারণ হতে পারে। খুনিরা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ছিল বলেই আমাদের ধারণা।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল হক জানান, মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে (২৩ জুলাই) সরই ইউনিয়নের হাছনা ভিটার খামার বাড়ি থেকে নিজ বাড়ি ফেরার পথে দা দিয়ে কুপিয়ে আলমগীর সিকদারকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আলমগীর সিকদার সরই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদারের বড় ছেলে। সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদার ও তার স্ত্রী বর্তমানে হজ পালনের জন্য মক্কায় অবস্থান করছেন। নিহতের পরিবারের পক্ষে ছোট ভাই দস্তগীর সিকদার থানায় এজাহার দায়ের করেন।