রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ১০ দফা বিএনপির

30

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলাসহ ১০ দফা সুপারিশ করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে এক গোলটেবিল আলোচনায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব সুপারিশ তুলে ধরেন।‘রোহিঙ্গা সংকট ও বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিলের আয়োজন করে বিএনপি।
আলোচনা সভায় রোহিঙ্গাদের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির আহ্বায়ক আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার প্রেক্ষাপট, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের প্রতিবেদন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তাদের নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানি, এই সরকারের কোনো নৈতিক অবস্থান নেই। তারা অনির্বাচিত সরকার। সুতরাং তাদের বিশ্বজনমত তৈরি করতে হলে জনগণকে সামনে নিয়েই এই অভাবটা পূরণ করতে হবে’।
রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার অর্থে বিপজ্জনক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান এককভাবে বাংলাদেশের পক্ষে করা সম্ভব হবে না। প্রথম থেকেই বলছি, একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে আহ্বান জানাচ্ছি, রোহিঙ্গাদের নিয়ে মানবিক যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা সমাধানে তারা তাদের ভূমিকা পালন করবে’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বিএনপির ১০ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, নিজের মাতৃভূমিতে অবাধ চলাচল নিশ্চিতকরণ, বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, প্রত্যাবাসনের আগে ও পরে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সুযোগ রাখা, রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে যেন জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি না হতে পারে, সে ব্যাপারে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘ওবায়দুল কাদের বক্তব্য আত্মহননের কথা’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আবারও পুরনো খেলা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি বিএনপি ও আমাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নাকি আমরা উসকে দিচ্ছি। এটা আত্মহননের কথা। এ ধরনের কথাবার্তা শুধু রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাধা হয়েই দাঁড়াবে না, সংকট আরও ঘনীভূত করবে’।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মইন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সচিব এএইচএম মোফাজ্জল করীম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, আফগানিস্তান ও তুরস্কের কূটনীতিকরা।