রেইনবো নেশন ও রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার কি

51

ঢাকা প্রতিনিধি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটি দফা একেকটি ভিন্ন চিন্তা ভাবনা থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ফিলোসফি, যা খুব কম রাজনীতিবিদ করতে পারেন। সেই জায়গায় তারেক রহমান এই রূপরেখা ঘোষণা দিয়ে নিজের নেতৃত্বের যোগ্যতাকে বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন কোনদিকে যাবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে আছে। দেশ কোন পথে যাবে সেটা নিয়েও দ্বিধায় আছে। বিদেশিরাও উদ্বিগ্ন। কারণ বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্ট হয়ে গেছে। এই গভীর পদ্ধতি থেকে দেশ কীভাবে বের হবে? সেই প্রেক্ষাপটে কিন্তু আজকে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে, যার মূল উদ্যোক্তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান।
তিনি বলেন, আজকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। যা অনেক গভীরে চলে গেছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বিএনপি তুলে ধরেছে বলে সাধারণ মানুষ বলছে। বিদেশিদের কাছে এটা খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
আমীর খসরু বলেন, আজকে বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে হলে ২৭ দফার বিকল্প নেই। বিএনপি ২৭ দফা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটি দফা একেকটি চিন্তা ভাবনা থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ফিলোসফি।
আজকে বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি শুরু হয়েছে- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী সংসদে বসে আছে। তারা তো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজকে দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা তো তারাই করছে। আজকে দেশের অর্থনীতি আওয়ামী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং পরিবর্তন দরকার। আপার হাউসের পরিবর্তন দরকার। যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী তারা যখন সেখানে যাবেন, তখনই দেশের স্থিতিশীলতা আসবে।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হলে জনগণের কাছে কিছু ওয়াদা দিতে হবে। সেটাই করেছেন দেশনায়ক তারেক রহমান, যা রাজনীতিবিদেরা খুব একটা করতে পারেন না। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বের যোগ্যতা অনেক ওপরে স্থান পেয়েছে, যা বিদেশিরাও প্রশংসা করছেন।
‘রেইনবো নেশনের’ ব্যাখ্যা করে আমীর খসরু বলেন, রেইনবো নেশন হলো- আজকে নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এখানে অনেক ধর্মের ও বর্ণের মানুষ বাস করে। সবার ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য বা সম্মান জানানোর জন্য রেইনবো নেশন। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে মূলে রেখে নতুনভাবে রেইনবো নেশনের কথা বলা হচ্ছে, যা নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই ধারণা মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। রেইনবো নেশন সারাবিশ্বকে বোঝায়।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহব্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহব্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহব্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একেএম মতিনুর রহমান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, অধ্যাপক খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, কৃষিবিদ অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এসএম শরিফুল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রইস উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম প্রমুখ।