রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা পাক যিয়ারত

21

ইসলামের প্রাণকেন্দ্র, ঈমানের আশ্রয়স্থল, ওহী নাযিলের বরকতময় স্থান, মুহাজির-আনসারদের মিলনভূমি ও মুসলমানদের প্রথম রাজধানীর নাম হল মদীনা শরীফ। এখান থেকেই বিচ্ছুরণ ঘটেছে হিদায়াতের আলো; যা আলোকিত করেছে সারা বিশ্বকে। এখান থেকেই সত্যের পতাকাবাহী মু’মিনগণ ছড়িয়ে পড়েছিলেন সারা দুনিয়ায় ইসলামের বারতা নিয়ে। নবীজীর শেষ দশ বছরের জীবন যাপন, তাঁর বরকতময় ওফাত ও পবিত্র কাফন-দাফন এ ভূমিতেই সম্পন্ন হয়েছে। এখান থেকেই তিনি পুনরুত্থিত হবেন।
তাই ইসলামি নিদর্শনাবলীর একটি বড় নিদর্শন হলো মদীনা শরীফ; যার যিয়ারত আমাদেরকে ইসলামের সোনালী ইতিহাসের দিকে ফিরে যেতে সাহায্য করে। সুদৃঢ় করে আমাদের ঈমান-আকীদার ভিত্তি। যার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা প্রত্যেক ঈমানদারের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য। ইসলামের নিদর্শনগুলোর প্রতি সম্মান দেখানো ও সেগুলোকে সংরক্ষণ করা মহান আল্লাহরই নির্দেশ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন: যে আল্লাহ তাআলার নিদর্শনাবলীকে সম্মান করবে সে যেন তার অন্তরের তাকওয়ারই বহিপ্রকাশ ঘটালো।” (সূরা হাজ্ব:৩২)
যেমনিভাবে সাফা, মারওয়া, মিনা, মুযদালিফা আল্লাহ তা’আলার নিদর্শনগুলোর অন্যতম। অনুরূপভাবে মদীনা শরীফও ইসলামের নিদর্শনাবলীর একটি বড় নিদর্শন; যাকে সম্মান প্রদর্শন করা ঈমান ও তাকওয়ার পরিচায়ক।
সাহাবায়ে কেরাম নবীজী এবং তাঁর ব্যক্তিগত ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ও বস্তুকে তাবাররুক হিসেবে গ্রহণ করার জন্যে উদগ্রীব থাকতেন। তাঁর চুল মুবারক, নখ মুবারক, জুতা মুবারকসহ তাঁর ব্যবহৃত জিনিস-পত্রকে তাঁরা অত্যন্ত পবিত্র মনে করে সেগুলোকে পবিত্র উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করতেন।
যেহেতু মদীনা তাইয়্যেবা আল্লাহর কাছে সম্মানিত হারাম হিসেবে পরিগণিত এবং হাদীস শরীফেও মদীনা শরীফ, সেখানকার মাটি, ধুলো-বালি, ফল-ফলাদি এবং বাসিন্দারা এমনকি সেখানে যাঁদেরকে দাফন করা হয়েছে তাঁদেরকে অনেক উচ্চ ফযীলতসম্পন্ন বলে মূল্যায়ন করা হয়। তাই মদীনা শরীফ যিয়ারত যদিও হজ্বের অংশ নয়, কিন্তু অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও পরম সৌভাগ্যের বিষয়।
নবীজীর সাথে সম্পর্কের কারণে মদীনা শরীফ আল্লাহর দরবারে খুবই দামী ও মূল্যবান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘আমি মদীনা শরীফের দুই হাররা বা কালো পাথর বিশিষ্ট যমীনের মাঝখানের অংশটুকু হারাম তথা সম্মানিত বলে ঘোষণা দিচ্ছি। এর কোন গাছ কাটা যাবে না বা কোন শিকারী জন্তু হত্যা করা যাবে না।’[মুসলিম : ২৪২৫।]
তিনি আরও এরশাদ করেন, ‘এখানে রক্তপাত করা যাবে না। এখানে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে অস্ত্র বহন করা যাবে না। ঘাস সংগ্রহের জন্য ছাড়া কোন গাছও কাটা যাবে না।’[মুসলিম : ২/১০০১।]
মদীনা শরীফের ফযীলত:
মদীনা শরীফের ফযীলত সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। নিম্নে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হল :
১. মক্কার ন্যায় মদীনা শরীফও পবিত্র নগরী: মক্কার ন্যায় মদীনা শরীফও পবিত্র নগরী। মদীনা শরীফও নিরাপদ শহর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মক্কা মুকাররমাকে হারাম ঘোষণা দিয়েছেন এবং তিনি তাকে সম্মানিত করেছেন। আর আমি এই দুই পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত মদীনা শরীফকে হারাম ঘোষণা করলাম।’ [মুসলিম : ২/১০০১।]
২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা শরীফের জন্য বরকতের দো‘আ করেছেন: তিনি এ বলে দো’আ করেছেন যে, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাদের ফল-ফলাদিতে বরকত দাও। আমাদের এ মদীনা শরীফে বরকত দাও। আমাদের সা’তে বরকত দাও এবং আমাদের মুদ-এ বরকত দাও।’[মুসলিম : ১৩৭৩।]
৩. মদীনা শরীফ যাবতীয় অকল্যাণকর বস্তুকে দূর করে দেয়: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “মদীনা শরীফ হল কামারের হাপরের মতো, এটি তার যাবতীয় অকল্যাণ দূর করে দেয় এবং তার কল্যাণকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে।’[বুখারী : ১৮৮৩; মুসলিম : ১৩৮৩।]
৪. শেষ যামানায় ঈমান মদীনা শরীফে এসে আশ্রয় নেবে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই ঈমান মদীনা শরীফে ফিরে আসবে যেমনিভাবে সাপ তার গর্তে ফিরে আসে।’[বুখারী : ১৮৬৭; মুসলিম : ১৪৭।]
৫. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা শরীফের জন্য দ্বিগুণ বরকতের দো‘আ করেছেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি মক্কায় যে বরকত দিয়েছেন মদীনা শরীফে তার দ্বিগুণ বরকত দান করুন।’[বুখারী: ১৮৮৫; মুসলিম: ১৩৬০।]
৬. মদীনা শরীফে মহামারি ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘মদীনা শরীফের প্রবেশদ্বারসমূহে ফেরেশতারা প্রহরায় নিযুক্ত আছেন, এতে মহামারি ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না।’[বুখারী: ১৮৮০; মুসলিম: ১৩৭৯।]
৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা শরীফে মৃত্যুবরণকারীর জন্য সুপারিশের প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘যার পক্ষে মদীনা শরীফে মৃত্যুবরণ করা সম্ভব সে যেন সেখানে মৃত্যুবরণ করে। কেননা মদীনা শরীফে যে মারা যাবে আমি তার পক্ষে সুপারিশ করব।’[মুসলিম : ১৩৭৪।]
৮. মদীনা শরীফে কোনরূপ জুলুম বা অন্যায় ঘটনা ঘটানোর ভয়াবহতা সম্পর্কে সাবধান হুশিয়ারী: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘মদীনা শরীফ ‘আইর’ থেকে ‘সাওর’ পর্যন্ত হারাম। যে ব্যক্তি মদীনা শরীফে কোন অন্যায় কাজ করবে অথবা কোন অন্যায়কারীকে আশ্রয় প্রদান করবে তার ওপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সমস্ত মানুষের লা‘নত। তার কাছ থেকে আল্লাহ কোন ফরয ও নফল কিছুই কবুল করবেন না।’[বুখারী : ১৮৭০; মুসলিম : ১৩৭০।]
তিনি আরও ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মদীনাবাসীদের ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে আল্লাহ তাআলা তাকে এমনভাবে বিলীন করে দেবেন যেভাবে সীসা আগুনে এবং লবণ পানিতে গলে বিলীন হয়ে যায়। (মুসলিম শরীফ,খ.২,পৃ.৯৯২)
মদীনা শরীফে অনেক স্মৃতি বিজড়িত ও ঐতিহাসিক স্থানের যিয়ারত করতে হাদীসে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। সেগুলো হলো : মসজিদে নববী শরীফ, মসজিদে কুবা, জান্নাতুল বাকী’, উহুদের শহীদদের মাযার ইত্যাদি।
মসজিদে নববী শরীফের ফযীলত:
মসজিদে নববী শরীফের রয়েছে ব্যাপক মর্যাদা ও অসাধারণ শ্রেষ্ঠত্ব। কুরআন ও হাদীসে এ সম্পর্কে একাধিক ঘোষণা এসেছে। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “অবশ্যই যে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাকওয়ার উপর প্রথম দিন থেকে তা বেশী হকদার যে, আপনি সেখানে সালাত কায়েম করতে দাঁড়াবেন। সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।’[তওবা : ১০৮।]
এতে এক নামায পড়লে পঞ্চাশ হাজার নামায পড়ার সওয়াব পাওয়া যায়: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “নিজ ঘরে যদি কেউ নামায পড়ে তাহলে তার এক নামাযের সাওয়াব, নিজ গোত্রের মসজিদে পঁচিশ নামাযের, জুমা হয় এমন মসজিদে পাঁচ শত, বাইতুল মাকদাসে এক নামায পঞ্চাশ হাজার নামায পড়ার সওয়াব পাওয়া যায়, আমার এই মসজিদে (মসজিদে নববী শরীফে) এক নামায পঞ্চাশ হাজার সালাতের সমান এবং মসজিদে হারামে এক নামায এক লাখ সালাতের সমান।” [ইবনু মাযা, হা-১৪১৩, মিশকাত-৭৫২]
তাঁর রওযা শরীফ ও মিম্বর শরীফের মাঝখানের জায়গাটুকু জান্নাতের অন্যতম অংশ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘আমার ঘর ও আমার মিম্বরের মাঝখানের অংশটুকু রওদাতুন মিন রিয়াদিল জান্নাত (জান্নাতের উদ্যানসমূহের একটি উদ্যান)।’[বুখারী : ১১২০; মুসলিম : ২৪৬৩।]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা পাক যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর :
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা পাক যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করার নির্দেশ প্রদান করে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, “যদি কখনও তারা নিজেদের আতœার প্রতি জুলুম করে হে মাহবুব’ আপনার দরবারে হাজির হয়। অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর রাসুলও তাদের পক্ষে সুপারিশ করেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে তাওবা কবুলকারী ও দয়ালু পাবে।”(সূরা আন নিসা, আয়াত- ৬৪)
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার কবর শরীফ যিয়ারত করল, তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।“{ ইবনে মাজা, হা-৩১১২)
তিনি আরও ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি হজ্ব করেছে, অথচ আমার যিয়ারত করেনি, সে আমার উপর জুলুম করল”। {হাশিয়ায়ে মুয়াত্তা মালিক, হা-৯৪৭}
তিনি আরও ইরশাদ করেন, “যে আমার ওফাতের পর আমার যেয়ারতে আসবে সে যেন আমার যাহেরী হায়াতেই যেয়ারত করতে আসল। যে দুই হেরমের যে কোন একটিতে মৃত্যুবরণ করবে কেয়ামত দিবসে সে নিরাপত্তা প্রাপ্তদের সাথে উত্থিত হবে। ” ( দারু ক্বুত্বনী, ২/২৭৮, হ- ১৯২, বায়হাক্বী, ৫/ ২৪৬)
তিনি আরও ইরশাদ করেন, ‘যে-কেউ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মদীনায় আসবে এবং আমার যিয়ারত করবে, কিয়ামতের দিন আমি তার জন্যে শাফায়াত করবো এবং তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবো।’। {বায়হাকী, হা-১০০৫৩, শুয়াবুল ঈমান, হা-৪১৫৩}
এ সকল হাদীস দ্বারা সুষ্পষ্টভাবে একথা প্রমাণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযায়ে আতহার যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা সম্পূর্ণ জায়েজ। শুধু জায়েজই নয়, বরং উত্তমও।
যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা পাক যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফরকে না-জায়েয বলে তাদের দলিল ও তার জবাব :
১. যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযায়ে আতহার যিয়ারতের উদ্দেশ্য সফর করা শিরক, না জায়েজ বলে তারা নিজেদের মতের পক্ষে নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা দলির পেশ করে থাকে। ‘তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে (অধিক সওয়াবের আশায়) সফর করা জায়েয নেই: মসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ ও মসজিদুল আক্সা।’[বুখারী : ১১৩২, ১১৮৯, মুসলিম: ১৩৯৭, ৩৪৫০।]
জবাব: জমহুর ওলামায়ে কিরাম উক্ত হাদীসটির ক্ষেত্রে বলেন, এ হাদীস শরীফে অধিক সওয়াবের আশায় তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোনও মসজিদে নামাযের উদ্দেশ্যে সফর করাকে নিষেধ করা হয়েছে, কেননা অন্যান্য সকল মসজিদে নামায পড়ার সাওয়াব সমান। কিন্তু এ তিন মসজিদে সওয়াব বেশি হওয়ায় এ মসজিদের উদ্দেশ্যে সফরের কথা বলা হয়েছে। তাইতো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “কোনও মুসল্লীর জন্য নামায আদায়ের লক্ষে তিনটি মসজিদ তথা মসজিদুল হারাম, মসজিদুল আক্সা ও আমার এ মসজিদ ব্যতিরেকে অন্য কোনও মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করা উচিৎ নয়। (মুসনাদ-এ আহমদ: ৩/৬৪, হা-১১৬০৯)
কবর যিয়ারত সুন্নাত: যেহেতু কবর যিয়ারত হচ্ছে সুন্নাত। সুতরাং কবর যিয়ারতের জন্য সফর করাটাও সুন্নাত বলে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, “তোমরা কবর যিয়ারত কর, কারণ তা তোমাদেরকে আখেরাত স্মরণ করিয়ে দেয়।”(ইবনু মাজা, ১/১১৩, হা-১৫৬৯)
ফতওয়ায়ে শামী’র ভূমিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইমাম শাফেয়ী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি ইমাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বরকত হাসিল করি এবং তাঁর মাযারে আসি। আমার কোন সমস্যা দেখা দিলে, প্রথমে দু’রাকাত নামায পড়ি। অতঃপর তাঁর মাযারে গিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তখন সহসা আমার সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। (ইমাম ইবনে আবেদীন শামী রাহ: রদ্দুল মুহতার, ১ম খন্ড)
সুতরাং অসংখ্য দলীলের মাধ্যমে প্রমানিত হলো নিঃসন্দেহে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা শরীফ যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা অবশ্যই জায়েয। পাশাপাশি আল্লাহর নেক বান্দাদের রওযাতে যাওয়া শুধু জায়েয নয়, বরং প্রখ্যাত ইমামদের অনুসৃত নীতিও বটে।

লেখক: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, সাদার্ন
বিশ্ববিদ্যালয়, খতীব, মুসাফিরখানা জামে মসজিদ