রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ে মিললো গুলিবিদ্ধ কৃষকের লাশ

12

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

পানের বরজ থেকে উঠানো পান একটি টুকরিতে গুছিয়ে রেখেছেন কৃষক সুমন দে শিশির (৫৫)। সকাল হলেই বাজারে নেয়ার কথা ছিল এসব পান। কিন্তু বাজারে পান আর নেয়া হল না তার। গুছিয়ে রাখা সেই পানের টুকরির ওপরই পড়ে ছিল তার গুলিবিদ্ধ লাশ। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার দুয়া ইউনিয়নের ত্রিপুরা সুন্দরী পাহাড় থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। নিহত সুমন দে পদুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ লক্ষীছড়া গ্রামের দুর্গাচরণ দে’র ছেলে। ত্রিপুরা সুন্দরী পাহাড় এলাকায় তার বিভিন্ন সবজি ও পানের বরজ রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘তার কপালের মাঝখানে একটি গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করছি গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছেন তিনি। তবে বিষয়টি নিশ্চিতে লাশ পরীক্ষার জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
জানা যায়, নিহত সুমন দে’র বাড়ি পদুয়ার লক্ষীছড়া হলেও ত্রিপুরা সুন্দরী এলাকায় তিনি পানের বরজ, ফল, শসাসহ নানা জাতের ফসলের ক্ষেত করেছেন। এসব ক্ষেত পাহাড়া দেওয়ার জন্য তিনি সেখানেই পাহাড়ের উপর ছোট একটা টিনের ঘরে থাকতেন। আশপাশে কোনো ঘর না থাকায় দুর্গম এই এলাকায় তাকে কে বা কারা খুন করেছে তা জানা যায়নি। তবে সন্ত্রাসীরা চাঁদার দাবিতে তাকে গুলি করে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার পরিবারে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। দুই মেয়ের বিয়ের পর তার একমাত্র পুত্র প্রবাসে থাকেন।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন জামান বাচ্চু বলেন, ‘সুমন দে রাতে ক্ষেত পাহারা দিতে সেখানেই থাকতেন। এর আগে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা তাকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য কয়েকবার হুশিয়ার করেছিল। একবার রাতে তাকে জোরপূর্বক ক্ষেত থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা।’
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। কিছুদিন আগে পদুয়া মহিশের বাম এলাকায় পুলিশের উপর হামলা, একজনকে ঘরে প্রবেশ করে খুন, সরফভাটায় সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে শত শত পরিবার ঘরছাড়া ছাড়াও মায়ের সামনে সন্তানকে গুলি করে হত্যা, দোকানে বসে থাকা ছয় গ্রামবাসীকে কুপিয়ে জখমসহ একটি গ্রুপের বেপরোয়া সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। এদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে সাড়াশি অভিযান চালানো উচিত বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।