রাঙামাটির মালটা যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে

8

এম. কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

রাঙামাটির নানিয়ারচরের চাষিরা মালটা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। স্বল্প দামে বিক্রি হলেও মালটা বাগানে পরিশ্রমের তুলনায় বাড়তি আয়ের কথা মাথায় রেখে চাষ করছেন চাষিরা।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলায় চলতি অর্থবছরে ১৭ হেক্টর জমিতে হয়েছে এই মালটার চাষ। ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি ৫ মেট্রিক টন করে। পাহাড়ে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষের। এতে দরকার কৃষি বিভাগের পর্যাপ্ত পরিমাণ সহযোগিতা ও পরামর্শ।
নানিয়ারচর সদরসহ ২টি সাপ্তাহিক বাজার ঘিলাছড়ি ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে রসালো ও পাকা মালটা বিক্রি হচ্ছে। যার কেজিপ্রতি দাম মাত্র ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সু-স্বাদু ও রসে ভরপুর এখানকার মালটাগুলো।
নানিয়ারচরে বিভিন্ন প্রজাতির মালটার চাষ হয়েছে। চাষিদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে তা চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করে থাকে। অন্যদিকে কাঁচামাল রাখার জন্য রাঙামাটি জেলায় হিমাগার না থাকায় অনেক সময় মৌসুমী ফল পচে গলে যায়। চাষিদের দাবি রাঙামাটিতে কয়েক হাজার হেক্টর ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন হিমাগার নির্মাণ করা হলে মৌসুমী ফলের গুদামজাতসহ ন্যায্য মূল্য পাবে তারা।
উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের চৌধুরীছড়া গ্রামের মালটা চাষি হেমেলিন্দু চাকমা বলে, আমি আমার কলা বাগানের মাঝে মাঝে মালটার চারা রোপণ করেছি, এবার আমি ৪ ঝুড়ি মালটা পেয়েছি যার ওজন প্রায় ৮০ কেজি হবে এবং ৫ হাজার টাকায় সব বিক্রি করতে পারব বলে আমি আশাবাদী। এভাবে কলা আনারস চাষের সাথে মালটা চাষ করা যেতে পারে। পাহাড়ে অনেক পতিত জমি পড়ে আছে সেখানে মালটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মৌসুমী ফল চাষ করা সম্ভব। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মেজবাহ্ জানান, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভিতরেই মালটা পূর্ণতা লাভ করে মৌসুম এরপরে বা আগে পারা হলে মালটার পূর্ণতা হবে না এবং রস কম হবে, মালটা এই সময়ে সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে তবে হলুদ বর্ণের করতে হলে কিছু প্যাকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। পাহাড়ের হতদরিদ্র কৃষকদের জন্য সেই খরচটা সম্ভব না বিধায় তারা মালটার পূর্ণ বয়স হলেও সবুজ বর্ণের এই মালটা বিক্রয় করে থাকে নানিয়ারচরে। পর্যায়ক্রমে এই মালটা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েই যাচ্ছে। মালটা চাষে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বিনামূল্যে মালটা চাষিদের সহযোগিতা করে থাকে।
নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জানান, মালটা ফল চাষে তেমন কোনো বাড়তি খরচ না হওয়ায় খুব সহজেই কৃষকরা এই ফল চাষে লাভবান হতে পারে। এই উপজেলার মাটি মালটা চাষের উপযোগী। এখানের মালটা খুবই রসালো ও সুস্বাদু। ফলটি চাষে এখানকার কৃষকদের যে উৎসাহ উদ্দীপনা বাড়ছে তা ধরে রাখতে পারলে নানিয়ারচর উপজেলা আনারস চাষের জন্য যেমন খ্যাতি অর্জন করেছে তেমনি মালটা চাষেও খ্যাতি নিয়ে আসবে।