মিরসরাইয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৭

9

মিরসরাই প্রতিনিধি

মিরসরাই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এক ছাত্রীকে অত্যক্তের জেরে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগের দুইটি গ্রæপ। এ ঘটনায় ৭ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হওয়ার পাশাপাশি দু’টি মোটরসাইকেল পুড়িয়েছে সংঘর্ষে লিপ্ত ছাত্রলীগকর্মীরা। সংঘর্ষের বিস্তৃতি ঘটে পৌর সদর পর্যন্ত। ফলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের উদ্রেক ঘটে।
হামলার ঘটনায় ইমতিয়াজ ও সায়মন নামের দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় দু’টি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, গত শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকালে মিরসরাই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সড়কে কলেজের এক শিক্ষার্থীকে উত্যক্তের (ইভটিজিং) জেরে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ অন্য গ্রুপকে ধাওয়া দেয়। এরপর গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মিরসরাই পৌরসভা মার্কেটের সামনে কলেজ ছাত্রলীগের আহব্বায়ক কমিটির সদস্য শাহনেওয়াজ নিশাদ ও তার সহপাঠীদের ওপর হামলা হয়। হামলায় নিশাদ, রাজিব, সাকিব ও সজিব নামের চার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আহত হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে মিরসরাই পৌর বাজারের ফুটওভার ব্রিজের নিচে আহত ছাত্রলীগ নেতা নিশাদের গ্রæপের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় মিরসরাই পৌরসভা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর।
এ সময় উপজেলা সড়কে হাসান নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করার সময় হাসানের মা নিজের সন্তানকে বাঁচাতে পেছন পেছন দৌঁড়াতে দেখা যায়। সর্বশেষ বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে পুনরায় কলেজ ছাত্রলীগ নেতা নওশাদের কর্মীরা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ তালবাড়ীয়া গ্রামে হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মী রিয়াদের বাড়িতে।
এসময় তারা ঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে এবং রিয়াদকে না পেয়ে তার এবং তার বড় ভাই সালমানের মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। হামলার ঘটনায় আহত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় আহত ছাত্রলীগ নেতা শাহনেওয়াজ নিশাদ অভিযোগ করেন, ‘গত শনিবার সকালে আমার কলেজের এক শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে আসলে কয়েকজন বখাটে তাকে ইভটিজিং করে। এ সময় আমরা বখাটেদের ধাওয়া করলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ ঘটনার জেরে রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহব্বায়ক জাফর ইকবালের অনুগতরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়’।
অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করে মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহব্বায়ক জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি পারিবারিক কাজে নারায়ণগঞ্জে আছি। যে ঘটনা ঘটেছে এটি একটি ইভটিজিং এর ঘটনা। ঘটনার সাথে অহেতুক আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উল্টো মোবাইল ফোনে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে’।
মিরসরাই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আবছার বলেন, ‘কলেজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে আসতে পারে। তবে ক্যাম্পাসে এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। ক্যাম্পাসের বাহিরে ঘটতে পারে। তবে আমাকে কেউ এ বিষয়ে জানায়নি’।
এ বিষয়ে মিরসরাই থানার সেকেন্ড অফিসার (উপ-পরিদর্শক) রাজিব পোদ্দার জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।