‘মায়ের দেয়া টিফিন খাবো খোলা খাবার বর্জন করবো’

20

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) ও নবনিযুক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবর্তন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, শিক্ষা মানুষের দক্ষতা বাড়ায়, কিন্তু অন্যের সমস্যায় ব্যতিত ও বেদনাহত হওয়া শেখায় না। ফলে শিক্ষিত মানুষগুলো মানুষের কষ্টে ব্যতিত হচ্ছে না। দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছে, অনেকে আবার পণ্যমূল্য বাড়িয়ে, সরবরাহ লাইনে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সমাজকে অস্থির করছে। সামাজিক সংস্কৃতির মূল্যবোধ মানুষকে অন্যের প্রতি মমত্ববোধ ও মানবিকতা জাগরুগ করতে শেখায়। গতকাল সোমবার নগরীর চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ক্যাব যুব গ্রæপ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে দুইদিনব্যাপী ‘মায়ের দেয়া বাসায় তৈরি টিফিন খাবো, বাইরে খোলা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করবো’ শিরোনামে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে প্রচারণা কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী তারা ২০৪১ সালে দেশের নেতৃত্ব প্রদান করবে। তাই তারা যদি সত্যিকারের মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ হতে না পারে তাহলে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, খাদ্যে ভেজাল এখন একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। মানুষ না খেয়ে মরছে না। প্রাণঘাতি নানা রোগ এখন খাদ্যে ভেজালের কারণে ঘটছে। যার কারণে যারা পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে যাচ্ছে তাদের ৮৩ শতাংশ মানুষই চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। আবার বিদেশী সংস্কৃতির কেএফসি, পিৎজা, ফুডপান্ডা ও কোমলপানীয়সহ নানা ধরনের ফাস্টফুডে আসক্তির সংখ্যাও ক্রমাগত বাড়ছে। আর এভাবেই নিজের অজান্তেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে।
কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ক্যাব বিভাগীয় সমন্বয়কারী শম্পা কে নাহার ও সংগঠক জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. ফয়েজউল্যাহ, চট্টগ্রাম ডায়বেটিক জেনারেল হাসপাতালের সাবেক উপ-পরিচালক পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম. নাসিরুল হক।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনে নিরাপদ ও সুষম খাদ্যের বিকল্প নাই। আগামি প্রজন্মকে সুস্থ, সবল রাখতে ও মেধাবী হিসাবে গড়ে তুলতে ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ এবং দেশীয় ফল, শাকসবজি গ্রহণে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নাই। কারণ ভেজাল ও জাঙ্কফুড জাতীয় খাবার গ্রহণের কারণে শিশুরা অমনোযোগী, বখাটে, স্থুল ও রোগাক্রান্ত হচ্ছে। আবার খোলা, ধুলা-বালি, দূষিত পানি ব্যবহার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার গ্রহণের কারণে ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, জন্ডিস, হাপানী, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগসহ নানা প্রাণঘাতি রোগের আক্রমণ ক্রমাগত বাড়ছে।