মধ্যযুগীয় কায়দায় জ্যাঠাকে পেটালেন ভাইপোরা!

41

বৃহস্পতিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল। হাটহাজারী উপজেলার ২ নম্বর ধলই ইউনিয়নের পশ্চিম ধলই গ্রামের হিম্মৎ চৌধুরী বাড়ির ষাটোর্ধ্ব কৃষক মো. হাসেম বসতঘর থেকে বের হন। উদ্দেশ্য পার্শ্ববর্তী জমি থেকে তার গৃহপালিত গরুর জন্য ঘাস কাটা। সন্ধ্যা নাগাদ ঘাস নিয়ে বাড়ি ফিরেন তিনি। এ সময় তার আপন ছোট ভাই মো. কাশেমের গরু এসব ঘাস খেয়ে ফেলে। এ ঘটনায় হাসেম গালমন্দ করলে কাশেমের ছেলেদের সাথে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। রাত হয়ে যাওয়ায় সাময়িকভাবে এ ঘটনার সুরাহা হলেও কিন্তু রেশ থেকে যায়।
পরের দিন গতকাল শুক্রবার সকালে তুচ্ছ এ ঘটনার রেশ ধরে দুই ভাইপো কাসেমের পুত্র সাগর (২৩) ও সজীব (১৮) তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে মো. হাসেমের উপর আক্রমণ চালায়। এক পর্যায়ে তাকে মাটিতে ফেলে রশি দিয়ে হাত-পা ও কোমর বেধে উপর্যুপরী কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের নানাস্থানে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তার আত্মচিৎকার শুনে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহতাব জানান, স্থানীয় কিছু লোক রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় হাসেম নামক এক বৃদ্ধকে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি দেখে স্যালাইন পুস করে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।
ধলই ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম জানান, বৃদ্ধ কৃষক মো. হাসেমের দুই ছেলে দেশের বাইরে থাকে। তার স্ত্রীও অসুস্থ। এ সুযোগে তাকে একা পেয়ে তুচ্ছ ঘটনার রেশ ধরে বেদড়ক পিটিয়েছে ভাইপোরা। বর্তমানে তিনি চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তবে এখনও তার অবস্থা শংকটাপন্ন।
হাসেমের অপর ছোট ভাই বাবু বলেন, একা পেয়ে আমার বড় ভাইকে অপর ভাইয়ের ছেলেরা রশি দিয়ে বেধে পিটুনি দিয়েছে।
এ ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্ত ভাইপো সাগরকে ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেন নি। হাসেমের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।