ভাসানচরে আসছে জাতিসংঘের কারিগরি দল

50

কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য প্রস্তুত করা ভাসানচরের পরিস্থিতি দেখতে জাতিসংঘের একটি কারিগরি দল আসছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। গতকাল সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ বেশ কিছুদিন ধরে এই ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। একটা টেকনিক্যাল টিম আছে এবং সেই টেকনিক্যাল টিমের ভাসানচর যাওয়ার কথা। ওখানে কিছু জিনিস তারা এনশিওর করতে চান এবং করার পর এই প্রক্রিয়া (স্থানান্তর) শুরু হবে’। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ‘এই মাসের মধ্যে’ দলটি আসতে পারে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে
১ লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের
সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সব ব্যবস্থাই ভাসানচরে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে গেলে কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্প জীবনের চেয়ে ভালো থাকবে তারা। তবে সাগরের ভেতরে জনমানবহীন ওই চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সম্প্রতি ওই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও তারা বলেছে, স্থানান্তরের বিষয়টি অবশ্যই রোহিঙ্গাদের সম্মতির ভিত্তিতে হতে হবে।
জাতিসংঘের দল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এই মাসের মধ্যে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ওয়েদার রিলেটেড একটা প্রশ্ন আছে। আপনারা জানেন, মাঝখানে ওয়েদার একটু প্রতিকূল হয়ে গেছিল, সেটা বোধ হয় এখন অনুকূল হয়েছে’। শহীদুল হক বলেন, ‘টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, তারা কম্পোজিশান দিয়েছে, কি দেখতে চান, আমরা মোটামুটি এই জিনিসটা এগিয়ে এনেছি’।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার- দু’টি ‘অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কারণ এর আগেও রিপ্যাট্রিয়েশন হয়েছে, ১৯৭৭-৭৮ এ হয়েছে, নব্বইয়ের প্রথম দিকে হয়েছে। একই রোহিঙ্গারা, তারা গেছেন এবং ফিরে এসেছেন। সুতরাং তাদের এই প্রত্যাবর্তনটা যাতে টেকসই হয়, আর ফিরে না আসে, তার জন্য অ্যাকাউন্টেবিলিটি ইজ ক্রিটিক্যাল। বিচার ও ফিরে যাওয়া একটা আরেকটার পরিপূরক’।
মিয়ানমারের বিচারে বাংলাদেশের তৎপরতা রোহিঙ্গা সংকটের দ্বিপাক্ষিক সমাধান চেষ্টাকে ব্যাহত করবে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের যে পলিসি, এটা মিক্সড অব বায়লেটারাল অ্যান্ড মাল্টিলেটারাল। ২০১৭ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএতে যখন বক্তব্য রেখেছেন, তখনই আমরা এটা ইউএনে নিয়ে গেছি। সুতরাং মিয়ানমার তখন থেকে জানে যে, আমরা দুই ফ্রন্টে চেষ্টা করছি। এই দু’টা একটা আরেকটার পরিপূরক’।