বিএম ডিপোর আগুন নিভেছে ৪০০ কন্টেইনার ধ্বংস

56

নিজস্ব প্রতিবেদক

সীতাকুন্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন পুরোপুরি নিভেছে। এখন ডিপোতে আর আগুন জ্বলছে না, তবে কিছু ধোঁয়া বের হচ্ছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৪০০ কন্টেইনার ধ্বংস হয়েছে। গতকাল বুধবার ডিপোর সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ডিপো কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। আমরা চেষ্টা করেছি আগুন যাতে না বাড়ে। এছাড়া নতুন করে যেন কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি ছিল আমাদের। যে কন্টেইনারগুলোতে আগুন লেগেছিল তার পাশে কিছু অক্ষত কন্টেইনার ছিল, এগুলোকে আমরা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। আগুন লাগার বড় কারণ ছিল এখানে কিছু রসায়নিক কন্টেইনার ছিল। এসব কন্টেইনারকে আমরা শনাক্ত করার চেষ্টা করেছি এবং সেগুলোকে পৃথক করে ফেলেছি। এ কারণে আগুন বাড়েনি। শনিবারের (৪ জুন) পর আর কোনো বিস্ফোরণ হয়নি, আশা করছি নতুন করে আর কোনো ধরনের বিস্ফোরণ হবে না।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীর কারিগরি একটি টিম ডিপোতে কাজ করছে। আর কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেই। ভেতরে আর কোনো ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যালের কন্টেইনার আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিপো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, প্রায় ৩০টির মতো কন্টেইনারে রসায়নিক আছে। সবাই মিলে সরেজমিন পরিদর্শন করে যেগুলোকে মার্ক করতে পেরেছি সেগুলোকে পৃথক করেছি। কিছু কন্টেইনার অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ডেমেজ হয়ে গেছে। সেগুলোকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। সেগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যাতে আর কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
ডিপোটি এখনও পুরো ঝুঁকিমুক্ত বলছি না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেহেতু ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় হয়ে গেছে, তাই বলতে পারি ঝুঁকির পরিমাণটা কমে গেছে। এর ভেতরে যেহেতু নতুন করে বিস্ফোরণ হয়নি, ফলে আর বিস্ফোরণ হবে না বলে আশা করি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল বলেন, ডিপোতো এখন আর আগুন জ্বলছে না, তবে এখানে গার্মেন্ট পণ্য আছে। এগুলোতে পানি দেওয়ার পর ধোঁয়া বের হচ্ছে। কিন্তু ডিপোর ভেতরে কোনো আগুন জ্বলছে না।
তিনি বলেন, পুরো ডিপোটি আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি, ঘুরে দেখেছি। নতুন করে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। ডিপোতে বিভিন্ন কন্টেইনার দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। সবগুলো উদ্ধার করতে পারিনি। ক্রেনের সাহায্যে এগুলো সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এগুলো সরানো হলে পরিস্থিতি বোঝা যাবে। তবে কোনো মরদেহ নেই বলে আমরা মনে করছি।
কী পরিমাণ কন্টেইনার ডেমেজ হয়ে গেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিপোটিতে চার হাজার ৪শ কন্টেইনার ছিল। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে বলতে পারি ৪০০ কন্টেইনার ধ্বংস হয়েছে। তবে ফাইনাল রিপোর্ট কোঅরডিনেট সেলের মাধ্যমে জানা যাবে। আমরা কাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছি। যাতে দ্রুত ডিপোটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর প্রথমে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছি। সেফটি নিশ্চিত করতে সময় নিয়েছি। তাই উদ্ধার কাজে কিছুটা সময় লাগছে। ধোঁয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নতুন করে কোনো রসায়নিক কন্টেইনার পাওয়া যায়নি।