বিএনপি সাথে পেল এলডিপি কল্যাণ পার্টি জাপাকে

28

ঢাকা প্রতিনিধি

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এবং ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিএনপি।
সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারণসহ বেশকিছু বিষয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিএনপির দ্বিতীয় দফা চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সাথে বৈঠক করেছে দলটি। মহাখালী ডিওএইচএসে এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের বাসায় বিএনপির সঙ্গে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অংশ নেন। অন্যদিকে এলডিপির পক্ষে ছিলেন দলটির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের দল।
এর আগে দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় পার্টি এবং রোববার ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির সাথে সংলাপের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু করে বিএনপি।
সংলাপ শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনে শরীক হতে একমত পোষণ করেছে এলডিপি। বাকি দলগুলোর সাথে বৈঠক শেষে একমতে পৌঁছে আন্দোলনের দফা উপস্থাপন করা হবে।
অন্যদিকে সরকার পতনের একদফা দাবিতে একমত পোষণ করে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধ দমাতে নেতৃত্ব দিতে হবে বিএনপিকে। আন্দোলনকে বেগবান করতে বিএনপির নেতৃত্বে সাথে থাকবে এলডিপি। সংলাপে সরকার পতন আন্দোলনের রূপরেখার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জোরালো করার বিষয়ে আলাপ হয় বলে জানান নেতারা।
এদিকে দুপুরে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার হটানোর ‘যুগপৎ আন্দোলন’ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই হবে। বিএনপির এবারের যুগপৎ আন্দোলনের মূল নেতৃত্বে কে থাকবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান আন্দোলন চলা অবস্থাতেই সকলের নেতৃত্বেই আমরা এটা গঠন করেছি সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায়। আগেও আমরা ঘোষণা করেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রী, তাঁর অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের (বিএনপি) নেতা।
‘সরকারবিরোধী’ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষ করেই বিএনপির ‘যুগপৎ আন্দোলন’ শুরু হবে বলে মির্জা ফখরুলের ভাষ্য।
গতকাল সংলাপে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলম খান। আর জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস, মাওলানা রুহুল আমীন, সেলিম মাস্টার, কেন্দ্রীয় নেতা হান্নান আহমেদ খান, এএসএম শামীম, কাজী মো. নজরুল ও গোলাম মোস্তফা।
সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের আরো বলেন, আমরা গণআন্দোলনের দফা নির্ধারণ করার বিষয় নিয়ে আজকে (সোমবার) আলোচনা করেছি। আমাদের দাবিনামার মধ্যে যেটা কমন, সেটা হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ; পদত্যাগ করে সংসদ বাতিল করতে হবে এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে তাদেরকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর তার অধীনে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি। আমরা একমত হয়েছি যে, এই দাবিগুলোতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করব। সব রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শেষ করেই এটা আমরা শুরু করব।
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমরা লক্ষ্য হচ্ছে, ‘এ টু জেড’ সকলকে ঐক্যবদ্ধ করা, একত্রিত করা। আল্লাহর রহমতে আমরা সেই পথে অনেকখানি অগ্রসর হয়েছি। আমরা আওয়ামী লীগ বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনায় সফলকাম হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ এই সংগ্রাম জয়যুক্ত হবেই।