বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু, সাতকানিয়ায় বন্ধ

41

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুতের সঞ্চালন স্বাভাবিক রেখেছে চট্টগ্রাম পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১। দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮টি উপজেলার মধ্যে গতকাল রবিবার দুপুরে বাঁশখালীতে বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক করা হয়েছে। বর্ষায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকায় সাতকানিয়ায় এখনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। সেখানে পাহাড়ি ঢলের পানিতে অনেক বসতবাড়ি ডুবে রয়েছে। ৮ দিনের টানাবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও শঙ্খ নদীর বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় এবার বন্যার ক্ষতি অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের সঞ্চালন দেওয়া হলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে। তাই বিদ্যুতের সঞ্চালন দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিকী। তিনি জানান, পানি নেমে যাওয়ার পর প্রাণহানির আশঙ্কা নাই মর্মে নিশ্চিত হওয়ার পর বিদ্যুতের সঞ্চালন করা হবে। এরপরও বিদ্যুতের সঞ্চলনে যাতে প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য লাল পতাকা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করছে পল্লীবিদ্যুৎ।
সূত্র জানায়, শঙ্খ নদীর ঢলের পানিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী ও চন্দনাইশ উপজেলা এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আত্মীয় স্বজনের কাছে এবং নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও কিছু কিছু মানুষ এখনো বসতঘরের চালের উপর সময় কাটাচ্ছেন। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শঙ্খ নদীর পানি বেড়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল বিঘœত হচ্ছে। কয়েকজন গাড়ি চালক জানিয়েছেন কক্সবাজার থেকে তারা রাত ১১ টার সময় গাড়ি ছাড়লেও মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে গাড়ি চলাচল করতে পারেনি। গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার পর গাড়ি চলাচল শুরু হয়। অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দারা ইঞ্জিন চালিত সাম্পান দিয়ে চলাচল করছেন।
পল্লীবিদ্যুৎ সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সাতকানিয়ার এলাকার একটি সাব স্টেশনের ট্রান্সফরমার ডুবে গেছে। গতকাল রবিবার দুপুরের দিকে পানি কমে যাওয়ায় ট্রান্সফরমারগুলো কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু যেসব ট্রান্সফরমারের ভেতরে এখনো পানি রয়ে গেছে সেসব ট্রান্সফরমারগুলো সচল করার কাজ চলছে। ট্রান্সফরমার সচল করতে বেশি সময় লাগবে না। তবে বাড়ি ঘরে এখনই বিদ্যুতের সঞ্চালন দেওয়া যাবে না। কারণ বিভিন্ন বাড়ি ঘর পানিতে ডুবে আছে। বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ির বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ে রয়েছে। অনেক ঘরবাড়ি বিদ্যুতেরওয়ারিংসহ পানিতে ডুবে আছে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের সঞ্চালন দেওয়া হলে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। অন্যদিকে বাঁশখালী সদর এলাকাসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ পানিবন্দী না হলেও বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাঁশখালীর কয়েকটি স্থানে গাছ ও গাছের ঢালপালা ভেঙে পড়ে তার ছিড়ে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা নৌকা করে সেসব এলাকায় গিয়ে সঞ্চালন লাইন মেরামত করেছেন। আজ (রবিবার) দুপুর থেকে বাঁশখালীতে বিদ্যুতের সঞ্চালন শুরু করা হয়েছে।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, বাঁশখালীতে বিদ্যুতের সঞ্চালন শুরু হলেও সেখানকার বাসিন্ধাদের চলাফেরায় সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া সাতকানিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে লাল পতাকা দিয়ে বাসিন্ধাদের সতর্ক করা হচ্ছে। পানির স্তর কমে গেলে বিদ্যুতের সঞ্চালন করা হবে। এরপরও লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত এলাকার লোকজন এবং নৌযান চলাচলে সতর্ক থাকতে হবে। অন্য ৬ উপজেলায় বড় ধরণের কোন সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি।