বন বিভাগের বিট কর্মকর্তাকে শোকজ ও বদলী

8

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

দক্ষিণ বনবিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের কোদালা বিটের সংরক্ষিত বন থেকে ৪৮টি সেগুন গাছ কেটে নেয়ার প্রমাণ মিলেছে। বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শীতল পালের নেতৃত্বে বনাঞ্চল পরিদর্শন করে এর সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় কোদালা বিট কর্মকর্তা নবীন কুমার ধরকে শোকজ ও অন্যত্র বদলী করেছে বনবিভাগ। তাকে উত্তর বনবিভাগে বদলি করা হয়েছে। স¤প্রতি বনাঞ্চল থেকে ৩৫০ ঘনফুট মূল্যবান সেগুন কাঠ জব্দ করার পর তাকে বদলী করা হলো। এই ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা আছে বলেও একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
গত রবিবার বিকালে এই বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী বন সংরক্ষক শীতল পাল বলেন, ‘কোদালা বিটের ফুইট্টাগোধা সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে ৪৮টি মূল্যবান গাছ কেটে নেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। এরমধ্যে দু’টি গামারি, একটি চাপালিশ এবং বাকীগুলো সেগুন গাছ। বনের গাছ কেটে নেয়ার ঘটনায় মামলার আবেদন করা হয়েছে। এটি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই ঘটনায় বিট অফিসারকে শোকজ করা হয়েছে। তবে তার বদলিটা নিয়মিত বদলির অংশ। স¤প্রতি ৮ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গাছ জব্দ করা হয়েছে। তবে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি’।
জানা যায়, কোদালা বিটের ৩ হাজার ৩৩ একর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে ৫৫০ একরে পুরনো সেগুন বাগান রয়েছে। প্রতিটির দাম অন্তত ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোদালা বিটের হোছনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তাপুর গভীর সংরক্ষিত বনে প্রভাবশালী কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট নিয়মিত গাছ কাটার মহোৎসব চালায়। কোদালা বনবিটের ৭/৮ কিলোমিটারের কাছের এসব গাছ কেটে নিতে সক্রিয় রয়েছে একাধিক সিন্ডিকেট। তবে বনের কতিপয় কর্মকর্তা ও বনপ্রহরীদের সাথে কাঠ পাচারকারীরা আঁতাত করে এসব গাছ কাটছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গাছ কাটার জন্য ব্যবহার করা হয় আধুনিক যন্ত্র। কাটার পর যাতে কেউ বুঝতে না পারে তার জন্য অনেক ক্ষেত্রে গাছের অবশিষ্টাংশ শিকড় পর্যন্ত উপড়ে ফেলা হয় বলে জানা গেছে।
কাঠ পাচারকারীর সঙ্গে সখ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে কোদালা বনবিটের সদ্য বদলি হওয়া কর্মকর্তা নবীন কুমার ধর দাবি করেন, বিটের ৭/৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলেও এগুলো গহীন জঙ্গলে। তবে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এসব গাছ কাটার সাথে জড়িত বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। খবর পেলেই তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে দাবি করেন। তাছাড়া জনবল সংকট রয়েছে কোদালা বিটে। বিশাল বন রক্ষায় মাত্র দু’জন বনপ্রহরী রয়েছে। তিনি বলেন, আমাকে দেয়া শোকজের জবাব দিয়েছি।
জানা যায়, শুধু কোদালা বিট এলাকা থেকেই নয়, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে নিয়মিত নিধন করা হচ্ছে মূল্যবান সেগুন ও নানা প্রজাতির গাছ। সংরক্ষিত বন থেকে গাছ কেটে পাচারের জন্য আলাদা সিন্ডিকেট সক্রিয় বলে জানা গেছে। তারা নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে সংরক্ষিত বনের মূল্যবান সেগুন কাঠ কাটছে। এতে বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে এই কাজে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ আছে।