ফলন ঘরে তুলতে না পেরে অসহায় সীমান্তের কৃষকরা

17

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলা বর্ষণের ঘটনায় দিশেহারা স্থানীয় কৃষকরা। গোলা বর্ষণের কারণে জুমসহ ফসলের কোন ফলন ঘরে তুলতে বা বাজারজাত করতে পারছে না সীমান্ত এলকারা কৃষকরা। এতে অর্থনৈতিকভাবে সংকটে পড়েছে এসব কৃষক পরিবারসহ সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। অভিযানে গোলা, মর্টার শেল, গুলিবর্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে দু’দফা বোমা ও মর্টার শেল বাংলাদেশ ভূখন্ডে এসে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে সীমান্ত এলাকায়।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৩শ ৪৭ হেক্টর পাহাড়ের ঢালুতে জমিতে চাষসহ আবাদ করা হয়েছে মৌসুমি জুমসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফসল।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি’র ঘুমধুম তুমব্রæ সীমান্ত পয়েন্ট থেকে শুরু করে বাইশফাড়ি-রিজু আমতলী সীমান্ত এলাকায় কৃষি জমিতে মৌসুমি জুমসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফসল উৎপাদিত হয়। সীমান্ত এলাকা থেকে উৎপাদিত নানা সবজি প্রতিদিনই কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া শরণার্থী শিবিরগুলোর চাহিদাও মিটানো হয়।
সীমান্তে উত্তেজনার কারণে জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় কৃষক ও জুমিয়া পরিবারের লোকজন জুমে ও ক্ষেত-খামারে যেতে না পারায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। ফলে আর্থিক সংকটে পড়ে দিন পার করছে সীমান্তবাসী কৃষকরা।
জুমচাষী ফয়েজুর রহমান জানান, সীমন্ত সংলগ্ন পাহাড়ে তিনি জুমচাষ করেছেন। কিন্তু গত এক মাস ধরে তার জুমে যাওয়া সম্ভব হয়নি আতঙ্কে। বর্তমানে তিনি পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কৃষিকাজ বন্ধ রেখেছেন তার মত অসংখ্য জুম চাষী।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, মাসখানেক ধরে সীমান্তে মিয়ানমারের ভিতরে গোলাগুলি চলমান রয়েছে। যা এখনও বন্ধ হয়নি। ফলে সীমান্তের কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছেন। কৃষকদের জীবিকাই চলে কৃষিকাজের মাধ্যমে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে সীমান্তবাসীদের শান্ত ও সতর্ক থাকার পরামর্শসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে সহযোগিতা দেয়া হবে।