পুরোনো দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল

20

নিজস্ব প্রতিবেদক

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নতুন করে নির্ধারণ ও কার্যকর করা হলেও এখনো পুরোনো দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নতুন দামের সয়াবিন তেল এখনো আসেনি। ফলে ক্রেতারা বাধ্য হয়ে পুরোনো দামেই সয়াবিন তেল নিচ্ছেন। তবে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে নতুন দামে সয়াবিন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন দোকনিরা।
ভোক্তাদের অভিযোগ, ভোজ্যতেল নিয়ে ব্যবসায়ীদের লুকোচুরি পুরোনো অভ্যাস। দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে যে গতিতে বেড়ে যায়, কমানোর ঘোষণা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরও তা কমতে দেখা যায় না। এর ফলে সবসময় ভোক্তারা ক্ষতির সম্মুখিন হন। তাই সরকারের তদারিক সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে জানান ভোক্তারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, কোম্পানিগুলো দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেও খুচরা বাজারে নতুন দামের তেল এখনও সরবরাহ করেনি। নতুন দামের তেল পেতে অন্তত এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে ভোক্তাদের। কারণ কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে প্রচুর তেল বাজারে সরবরাহ করেছে। সেগুলো বিক্রি শেষ না হলে নতুন তেলের ক্রয়াদেশ দিতে চান না খুচরা বিক্রেতারা। এদিকে গত সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। সংগঠনটি বোতলজাত প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪ টাকা কমিয়ে ১৭৮ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতলে ৬৫ টাকা কমিয়ে ৮৮০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৭ টাকা কমিয়ে ১৫৮ টাকা নির্ধারণ করেছে। গত মঙ্গলবার থেকেই বাজারে এ দর কার্যকর হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
কিন্তু গতকাল বুধবার নগরীর বহদ্দারহাট, চকবাজার, কর্ণফুলী মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দোকানদাররা আগের দরেই তেল বিক্রি করছেন। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯২ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল সর্বোচ্চ ৯৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। এইদিন ক্রেতারা দোকানে গিয়ে নতুন দামের সয়াবিন তেল কিনতে পারেননি। উপায় না দেখে আগের দামে তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
এসময় আদিল নামের এক ক্রেতা জানান, টেলিভিশন ও পত্রিকায় দেখা যায় তেলের দাম কমানো হয়েছে। বাস্তবে দোকানে এসে এর প্রভাব দেখা যায় না। কেউ কারো কথা শুনে না। যে যার মত করে ক্রেতাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। আমরা ভোক্তারা সবসময় ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি।
অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানির কারসাজির কারণে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সবসময় ক্রেতাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি। কারণ, ক্রেতারা দোকানে এসেই নতুন দামের তেল চান।
জানা যায়, বিশ্বের বৃহত্তম পাম অয়েল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া। মোট চাহিদার ৩৯ শতাংশই তারা রপ্তানি করে। এর পরেই মালয়েশিয়ার অবস্থান। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চীন ও শ্রীলঙ্কা সীমিত আকারে পাম অয়েল উৎপাদন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে প্রায় ৫ লাখ ১৫ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৭৫ হাজার টন কম। অবশ্য একই সময়ে সয়াবিন বীজের আমদানি হয়েছে ১৩ লাখ ৩১ হাজার টন, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২ লাখ ৩৭ হাজার টন বেশি। এ ছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে পরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে ১৫ হাজার টনের কিছু বেশি। তার আগের বছর কোনো পরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হয়নি।