‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া’

6

মিয়া জামশেদ উদ্দীন

চেষ্টার কমতি নেই, তবুও আগের মতো পা মাড়িয়ে উঠতে পারছি না। তখন দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কি বা উপায় থাকতে পারে; ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকের ঘটনা, অথচ ঘোড়ার মতো এ সিঁড়ি ‘টপ-টপ’ টপকে উঠেছি। একবার নয় শতবার উঠেছি। এটি ছিল শারীরিক কসরত; অর্থাৎ মাসল মজবুতসহ ফুসফুস ও শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে ফুটবলের এ প্রশিক্ষণ। এ ধরনের ব্যায়াম অতি কষ্টদায়ক, সপ্তাহে একদিনের বেশি করা যায় না। এটি একটি টিমওয়ার্ক। সীতাকুÐ স্কুল মাঠ হতে দৌড় শুরু হতো। অনেকটা দীর্ঘ দু’ কি. মি. দৌড়ে গিয়ে ৫১টি সিঁড়ির ধাপ দ্রæত উঠা-নামা করা।
সিনিয়র ফছি-উল আলম, মো. ইদ্রিস, প্রদীপ ভট্ট, মো. ইকবাল, আহেম্মদু, মো.ফরহাদ, দীপক বড়–য়া, নুরুল গণি, মদন, রফিক, আবুল হোসেন, খোকন, স্বপন (মুরাদপুর)। সমবয়সীদের মধ্যে জসিম, সালাম, রাজু, জামশেদ, মোহাম্মদ আলী, নাছির, তাপস, নুরুদ্দিন, স্বপন, রাজু, রাজু (২), মোর্শেদ, বাবু, ফয়েজ, আলী ও ছাফা প্রমুখ। সিনিয়রদের মধ্যে মো. শামছুল আলম, ফছি-উল আলম, মো. ইকবাল প্রথম বিভাগ পর্যন্ত খেলেছেন। একাধিকবার জাতীয় দলে খেলেছেন মো. শামছুল আলম। তিনি দাপটের সাথে টানা বহু বছর ঢাকার মাঠ কাঁপিয়েছেন। শামছু আলম দেশের অন্যতম সেরা ক্লাব মোহামেডানেও খেলেছেন। শেষ কয়েক বছর আরামবাগ ক্লাব হয়ে খেলে ইতি টানে। তিনি আমাদের কোচারও ছিলেন। স্থানীয় বর্ণালী ক্লাবের পক্ষে প্রশিক্ষণ দিতেন। ভ্রাতৃসংঘের ইকবাল, প্রদীপ ভট্টাচার্য. নুরুল গণিও প্রশিক্ষণ দিতেন।
তবে ফুটবল খেলায় বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারিনি। মোহামেডান-বøু, দ্বিতীয় বিভাগের চুড়ান্ত বাচাইয়ে বাদ পড়ে যাই। ওঠি কনসফিসি ছিল। মোহামেডান-বøু টিম ম্যানেজার ছিলেন অশিৎ বাবু, তিনি বাছাইপর্বের প্রথমদিন আমাকে ও নুরুদ্দিনকে সিলেকশন করেন। শেষতক আফসোস করেন। অশিৎ বাবুর বাড়ি ফেনী জেলায়। বর্ণালী ক্লাবের ক্রিড়া সম্পাদক ছিলেন গোপাল চন্দ্র ভৌমিক। তাঁরও পৈতৃক বাড়ি ফেনী জেলায়। তবে আমাদের মধ্যে বুড়ো খেলোয়াড় ছিলেন মছি-উ-দ্দৌলা। তাঁকে আমরা নানা ডাকতাম। তিনি খেতেন লেপ্টব্যাগে, মাঝে মাঝে লিং-এও খেলতেন। ওনি খালি পায়ে খেলতে নামলেও ধারে-কাছে কেউ যেতেন না, পা এতই শক্ত-মজবুত ছিল যে, বাপরে বাপ, লাগলেই কান পর্যন্ত ঝিঁম খেটে ওঠতো। একবার ডি-বক্সের সম্মুখ থেকে ফ্রি কিক্ করলাম; ওটি ছিল অসাধারণ একটি কিক্। অনেকটা গোল বক্সের বারঘেঁষেই বলটি জালে জড়িয়ে গেল। গোলকিপার লাফিয়ে উঠেও ঠেকাতে পারেনি। এটি ছিল একটি প্র্যাকটিস গেইম। নানার দলের বিরুদ্ধে গোলটি হয়। তবুও তিনি আনন্দে উচ্ছ¡সিত। রীতিমত ‘গোল’ করে চিৎকার দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে উৎফুল্লতা প্রকাশ করেন। দ্বিতীয় স্মরণীয় ঘটনা হলো, নিজামপুর সরকারহাট স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠিত আন্তজেলা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে। খেলায় আমাদের টিম ‘বর্ণালী ক্লাব’ তিন শূন্য গোলে হেরে যেতে বসেছে। আমাকে শেষাবধি হাফটাইমে মাঠে নামালেন। আমার চোখে-মুখে ঝাঁঝালো আগুনের ফুলকি বহিতে থাকে; আমি খেলতাম রাইট ও ল্যাপ্টবেগে, সমানে। না, নিজেকে ধরে রাখতে পারছি না। পুরো মাঠ দাপড়িয়ে খেলছিলাম। যেখানে বল সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ি, হয় বল নয় ম্যান; সম্ভবত গোলকিপার বাদে প্রতিপক্ষের সবাইকে সমানে আঁচড়ে ছাড়ি! ঘটনাটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। খেলা শেষে টিম ম্যানেজার শামছুভাই আমাকে ডবল মিষ্টি খাওয়ালেন এবং টিম হারার পরও ঘোলাজলে স্বাদ মিটালেন। ভাটিয়ারী হাজি টি এ সি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অপর এক আন্তঃজেলা টুর্নামেন্ট হয় ’৮৮-৮৯ সালের দিকে। ঐ মাঠেও খেলতে নামি। এ খেলার আগেরদিন আমাদের ট্রায়াল হয়। টিম ম্যানেজার গোপাল বাবু বললেন, জামশেদ আজকের ট্রায়ালে শামছুকে ঠেকাতে পারলে তোমাকে আগামীকাল মাঠে নামাবো। শামছুভাই জাতীয় দলের প্রথম বিভাগের খেলোয়াড়; তাঁকে কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না, ম্যানেজার গোপাল বাবু নিশ্চিত ধরে নিয়েছেন। শামছুভাই খেতেন লিং অথবা লেপ আউটে। অবশ্য মাঝে মাঝে স্ট্রেকারেও খেলতেন। সেদিন খেলেছিলেন লেপ্ট আউট কাম লিংয়ে। পুরো খেলায় শামছুভাই একবারও ভেদ করতে পারেনি আমার সীমানা! তাই ফছিভাই বলতেন, বাপরে বাপ তোর ছাগল্যা খুঁটি; এরমধ্যে একবার মোর্শেদ আমার সম্মুখে বল নিয়ে ডিভিলিং করছিল; সে আমাদের জুনিয়র ছিল। একবার-দু’বার-তৃতীয়বার, শেষতক বলসহ ছিঁটকে ফেলি মাঠের বাহিরে খালে। সালাম এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে… আমিও আর কি করি, ছোটভাই হিসেবে খাল থেকে আবারও ওঠিয়ে আনি। রেজাউলও ভালো খেলতো। রাজু বড়–য়ার শক্তির দাপটে ছুটতো। ছোটদের মধ্যে টিটু বড়–য়াও ভালো খেলতো। একেবারে দা-কুমড়ো হিসাব ছিল সালামের। জসিমের ছিল ডস দেয়া।
বন্ধুর মেয়ে ঐশীকা ভৌমিক টপ-টপ করে উঠতে লাগলো স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরের সিঁড়ি বেয়ে। যেন আমাকে স্মরণ করিয়ে দিল, হয়তো আর কখনো ফেরা যাবে না; ঐশীকার সঙ্গে কাকাতো ভাই অপূর্ব ভৌমিক ও কাকা ঋতঙ্কর বসু রয়েছে। তারা অনেকটা সমবয়সী। ঋতঙ্কর বসু এসেছে কলকাতা বারসাতের উত্তর চব্বিশ পরগণা থেকে। সে বিএসসিতে পড়ে। সঙ্গে মা কৃষ্ণা বসুও রয়েছেন। কৃষ্ণা বসুর আদিনিবাস বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুÐের বাড়বকুÐে। বাবা ছিলেন দ্বিজেন্দ্র লাল দে প্রকাশ দ্বিজেন্দ্র মুক্তার। দেশে থাকতে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পাক-ভারত ভাগে তিনি সপরিবারে ওপারে চলে যান। কৃষ্ণা বসু জানালেন, তাঁর জন্ম ওপার বাংলায়। তবুও পৈতৃক ভিটে-মাটির টান কখনো ভুলতে পারেনি। এখানে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। বড়বোন, স্বামী দীলিপ ভৌমিক, মেয়ে ও ছেলেরা রয়েছে। ২৬ আগস্ট (২০২২ইং) সীতাকুÐেও আসেন মঠমন্দিরে পূজা-অর্চনাসহ দর্শনে। স্বামী বাদল বসু কিছুদিন কলকতায় সাংবাদিকতা করেছেন। পরে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
কৃষ্ণাবসু ভাগিনা বৌ কান্তা দে ও ভাগনী রূপুদত্তকে নিয়ে স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরে প্রবেশ করেন। ভাগনী রূপুদত্ত ও খালা কৃষ্ণাবসু প্রায় সমবয়সী। কান্তা দে একজন উচ্চমার্গের শিল্পীও বটে। আবার একটি স্কুলে পড়ান। সময় স্বল্পতার কারনে ১৩শ ফুট উপরে, পাহাড় বেয়ে চন্দ্রনাথ মন্দিরে উঠা সম্ভব হয়নি। ওই মন্দিরে ওঠতে হলে সকাল থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। অনেকটা ঠান্ডা-শীতল পরিবেশে। সূর্যের কড়া রৌদে সম্ভব হয়ে উঠেনা। চন্দ্রনার্থ ধামের পাদদেশে জন্ম হয়েও এযাবতকালে একবারই হয় এ মন্দিরে। দ্বিতীয় বার উঠতে সে-কি তোড়জোড়। মাঝপথ থেকে নেমে আসতে বাধ্য হই। বেশ কয়েকবার বমিও করতে হয়। সঙ্গে ছিলেন সীতাকুÐ উপকূলীয় বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা জনাব আলী। তাঁকে অনেকটা একা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। তিনিও অদম্য, একা একা উঠেই গেলেন। অবশ্য পথে পথে বহু দর্শনার্থীর দেখা মিলে। সময়টা এক শিবচতুর্দশী মেলা উপলক্ষে।
কিন্তু তাঁরা পাহাড়ের মধ্যখানে অবস্থিত শ্রী শ্রী ক্রমদীশ্বর স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরে পূজা সারিয়ে ‘হরে-হরে, কৃষ্ণ’ নামে ঘণ্টা-ধ্বনি বাজালেন। তারপর কান্তা দে বিষ্ণু দেবতার একটি অষ্টপাথরের তৈরী মূর্তি ও অষ্টপাথরের শিবলিঙ্গ নিলেন। তবে শিব দেবতার লিঙ্গ নিতে গিয়ে পূজারী কিছু নিয়মকানুন আগাম বললেন। তাঁরাও তা মেনে চলবে বলে জানালেন। অবশ্য ওই মন্দিরের পূজারীর ছোটভাই তপন চক্রবর্তী আমাদের একসময়কার রাজনৈতিক সতীর্থ বন্ধু ছিলেন। তুখোড় বামঘরানার স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্রনেতাও। কালেভদ্রে আজ ধর্মকর্মে নিয়োজিত। আমাদের দর্শণার্থী টিম মধ্যহ্নভোজের জন্য একটু উৎকণ্ঠায় ছিলেন। অবশেষে স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরে অন্নপ্রসাদ ব্যবস্থা করতে পেরেই মহা খুশি হন তাঁরা। তবে দক্ষিণা তেমন একটা বেশি নেননি, মাত্র প্রতি প্লেট ৮০টাকা। আবার এক প্লেট দু’জনে ভাগাভাগি করে খেয়েও কিছু উচ্ছিষ্ট থেকে গেল। এবার কিন্তু নামার পালা। তিনটার মধ্যে শেষ করতে হবে। সিডিউল একেবারে টাইট। শুধু উঁকি দিয়ে দেখা। এদিক-সেদিক যাওয়ারও সুযোগ নেই। এর মধ্যে স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরে উঠার পথে নবনির্মিত ত্রি-শূল হস্তে শিবদেবরা প্রতিস্থাপিত সুউচ্চ গেটটির ধারে সকলে ফটোসেশনে মত্ত হয়। সবাই হুড়োহুড়ি করে বেশ ছবি তোলা হয়। সর্বশেষ শ্রী শ্রী বিশ্বনাথ মন্দির দেখতে যাওয়া। চলতি বছরের (২০২২ইং) প্রথম দিকে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ মন্দির শঙ্করমঠের পাদদেশে নির্মাণ করা হয়। এটি দেখভাল করে শঙ্করমঠের পূজারীরা। তবে দর্শন করার মতো একখান মন্দির হয়েছে। চন্দ্রনাথ ধামে এযাবকালে এটি সবচাইতে বড় মন্দির। মন্দিরটি সাত তলা-সম উঁচু। ধাপে ধাপে নকশা কাটা, অনেকটা নৌকার পাল আকৃতি শিরে ত্রি-শূল প্রতিস্থাপিত। দুর থেকে দেখলে মনে হয় সাগরের উচ্ছ¡সিত জলরাশি। সেগুন কাঠের দরজা। সিঁড়ির রেলিংও সেগুন কাঠের। প্রতিটি ফ্লোরে ও সিঁড়ির ধাপে শ্বেতপাথরের টাইলস করা। প্রথম ও দ্বিতীয় তলার বিস্তৃত ফ্লোর, একসঙ্গে দুই হাজারেরও অধিক দর্শাণার্থী ও পূজারীর পূজা দেয়ার সুযোগ রয়েছে। ব্যাসকুÐ ও মহাশ্মশানও আটঘাটে দেয়ালের ঘেরা। শুধু দূর থেকে শ্রী ননী গোপল শাহ স্মৃতিফলক মন্দিরটি ব্যাসকুÐের পাশে শিরউঁচু দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে একটি ও নিচে স্বামী বিবেকানন্দ মন্দিরের নির্মাণ কাজ চলছে। পাশে পঞ্চবটি চত্বরে স্বামী বিবেকান্দের অক্ষয় মূর্তি, বামে আস্তান বাড়ি ও ননী গোপাল শাহা তীর্থ নিবাস। অনেকটা পরিপাটি হয়ে উঠেছে চন্দ্রনাথ ধাম। সবুজবেষ্টিত পূর্ব দিগন্তে হেলে আছে এ চন্দ্রনাথ পাহাড়। একদিকে পাহাড় অপর দিকে স›দ্বীপ চ্যানেল। মাঝখানে বুক ছিঁড়ে বয়ে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক।
২৬ আগস্ট ২০২২ইং, উপকূলীয় অঞ্চল স›দ্বীপ চ্যানেলে বেড়াতে গিয়ে রীতিমত মুগ্ধ হয়ে উঠি। বেড়িবাঁধ ঘেঁষে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ স্থাপিত হয়েছে। ওইটি স্থাপন করে ‘ইউরো’ এলপি গ্যাস প্লান কো.। ওখানে একাধিক কো. এলপি গ্যাস প্লান স্থাপন করেন। সর্বপ্রথম এলপি গ্যাস প্লান স্থাপন করেন বিএম এনার্জি। নিরাপদ ও জনবসতি দূরত বজায় রেখেই সক্ষমতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে কোম্পানিটি। অনেকটা বিনিয়োগ প্রসারিত করে। এর কয়েক বছর পর জে এম আই, ইউরো, ইউনিভার্সেল, ক্যাপিটেল, কোস্টাল, পদ্মা, বসুন্ধরাসহ অন্তত ১৫টি এলপি গ্যাস প্লান স্থাপিত হয়। বিশেষ করে বাঁশবাড়িয়া হতে মুরাদপুরের আংশিক নিয়ে এ এলপি গ্যাস প্লান প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এতে করে এলাকাটি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। একই সাথে কর্ণফুলী টানেল থেকে মিরসরাই ইকোনোমিজুন পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উপর ‘মেরিন ড্রাইভ’ সড়ক নির্মাণ হলে পুরো সীতাকুÐসহ চট্টগ্রামের এ উপকূলীয় অঞ্চল পর্যটন শিল্পের মহাযজ্ঞে রূপান্তরিত হবে।
প্রকৃতির কি অপূর্ব-সৌন্দর্যের আধার। অদূরে আদলি পয়সার মতো চকচক করে ঢেউ। মনে মনে প্রেমের ও প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাসের কবিতা আওড়াতে থাকি, দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের উপর…
বাড়বকুÐে মান্দারী টোল গ্রামের বুক ছিঁড়ে ঐ উপকূলীয় অঞ্চলে যাওয়া হয়। গ্রামটিতে ঘুমিয়ে আছে অত্রপরগণার শিক্ষার আলো-প্রজ¦লিত করেন যিনি, অলীয়ে কামেল হজ. মাওলানা ওবায়দুল হক। বন্ধু-সজ্জন মোহাম্মদ মহসিনের আহŸানে যাওয়া হয় এ ভ্রমনে। অবশ্য আমার ¯েœহভাজন আব্দুর রশিদ রুবেলের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস-এর জানাজায় গিয়ে মাস্টার মোহাম্মদ মহসিনের সাথে দেখা। তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। একই সাথে মহসিন সাহেব তাঁদের পুরানো বাড়িতেও নিয়ে যান। সেখানে দেখা হয় আমার শৈশবের স্কুল সাথী বিবি জাহানারা বেগমের সাথে। তাঁর পুত্র ও পুত্রবধূর সাথে পরিচয় করে দিলেন। বিবি জাহানারা বেগম দাঁড়িয়ে আছে ঘরের আঙ্গিনায়। ঘর বলতে আসমানিদের কুঁড়ে ঘর নয়; ইয়া আলিশান তিনতলা বিল্ডিং। অজ পাড়াতেও এমন আধুনিক-শৈল্পিক ইমারত! মাস্টার সাহেব সব খুঁটে খুঁটে দেখিয়ে আবারও নিজের দ্বিতল বিল্ডিং ঘরে নিয়ে ভাবির হাতের কপি খাইয়ে বিদায় জানালেন।

লেখক : কবি, কলামিস্ট ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক