দুঃসময় কেটে যাবে সংকট সাময়িক

18

ঢাকা প্রতিনিধি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী বিরাজমান সংকটের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। আর এ সংকটকে সাময়িক বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তারা বলেন, শিগগিরই এ দুঃসময় কেটে যাবে এবং সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির ফলে জনজীবনে কি প্রভাব পড়ছে, তার মূল্যায়ন হচ্ছে। মূল্যায়নের ভিত্তিতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। তাই জ্বালানির দাম বাড়লে পণ্য ও সেবার দাম বৃদ্ধি বা মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা থাকে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবার জন্যই সরকার। এ ধরনের পরিস্থিতিতে গরীব মানুষের কষ্ট অনেক বেশি হয়। এরই মধ্যে সরকার তাদের জন্য ওএমএস এবং টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকিমূল্যে পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তবে নতুন করে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা থেকে গরীব মানুষকে সুরক্ষা দিতে আরও কী সহায়তা দেওয়া যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডলারের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে মুস্তফা কামাল বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধি একটা বৈশ্বিক সংকট। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের দেশে দেশে বাড়ছে ডলারের দাম। যারা যুদ্ধ করছে তাদেরও বাড়ছে, যারা যুদ্ধে উসকানি দিচ্ছেন তাদেরও বাড়ছে। বাংলাদেশও তার প্রভাব আছে। তবে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে। শিগগিরই ডলারের দাম স্বাভাবিক হবে।
অন্যদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, আশা করছি শিগগিরই বিদ্যুতের সমস্যা, অর্থ ঘাটতিসহ সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
তিনি গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের অডিটোরিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু গণমুখী সমবায় ভাবনার আলোকে বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্পের উপকারভোগীদের মাঝে নিজ তহবিল থেকে ঋণের চেক বিতরণ করেন।
এ সময় এম এ মান্নান বলেন, অর্থের ঘাটতিতে পড়ে আমরা কিছুটা অসুবিধায় আছি। এ সমস্যা আমরা তৈরি করিনি। অন্য রাষ্ট্রের তৈরি করা সমস্যা আমাদের ঘাড়ে এসে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। গ্রামকে আলোকিত করেছি। এখন বিদ্যুৎ কিছুটা কম পেলেও এক মাসের মধ্যে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ভিত অনেক মজবুত। বিএনপি আসবে, যাবে। তারা কীভাবে ক্ষমতায় এসেছিল, দেশের মানুষ জানে। সুতরাং, ভয়ভীতি নেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সাথে ছিল, আছে এবং সবসময়ই থাকবে।
হাওরবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও দরদ অনেক জানিয়ে এমএ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী গ্রামাঞ্চলে মানুষদের ভালোবাসেন। হাওরাঞ্চলের মানুষের প্রতি উনার মায়া বেশি। এ জন্য হাওরাঞ্চলে আমরা বড়বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। যেখানে যা প্রয়োজন সব করা হচ্ছে। কাজেই শেখ হাসিনাকে মনে রাখতে হবে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশের যে কোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে আছে আওয়ামী লীগ সরকার। জনবান্ধব এই সরকারের আমলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। সরকার মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি নামে একটা দল আছে যারা কোনো কাজ করে না। দুঃসময়ে জনগণের পাশে থাকে না। তাদের কাজ হল ঘরে বসে বসে সরকারের সমালোচনা করা।
মন্ত্রী আরও বলেন, যারা বলে আওয়ামী লীগের বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেছে, তাদের ঘণ্টাই জনগণ বাজিয়ে দিয়েছ। আওয়ামী লীগের বিদায়ের ঘণ্টা কখনোই বাজবে না।