টাইমের তালিকায় মেরিনা

6

মার্কিন সাময়িকী টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাশ্যুম। উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে ভূমিকার স্বীকৃতিতে টাইমের এ বছরের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন তিনি। বুধবার ওই তালিকা প্রকাশ করেছে টাইম ম্যাগাজিন।
তাবাশ্যুম সম্পর্কে টাইম লিখেছে, সাধারণত পুরস্কারজয়ী স্থপতিদের ক্ষেত্রে পরার্থবাদের প্রসঙ্গ আসে না। কিন্তু মেরিনা তাবাশ্যুম সাধারণ কেউ নন। তিনি এমন কিছু চর্চার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ তুলে ধরার পাশাপাশি আমাদের এই গ্রহের সমস্যা বা বিপদগুলোও অগ্রাধিকার পায়। খবর বিডিনিউজের।
সুলতানি স্থাপত্যের অনুপ্রেরণায় গড়া গম্বুজবিহীন ঢাকার দক্ষিণখানের বায়তুর রউফ মসজিদ ২০১৬ সালে জিতে নেয় আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার। এই মসজিদের রূপকার বুয়েটের স্থাপত্যবিদ্যার প্রাক্তন শিক্ষার্থী মেরিনা তাবাশ্যুম। আটটি পিলারের ওপর নির্মিত এই মসজিদে আলো হাওয়া খেলার যে ব্যবস্থা তিনি রেখেছেন, তা আগা খান পুরস্কারের জুরি বোর্ডের প্রশংসা কুড়ায়।
টাইম সাময়িকীতে তার সেই মসজিদের কথাও বলা হয়েছে। বায়তুর রউফ মসজিদের প্রসঙ্গে মেরিনা তাবাশ্যুম বলেছিলেন, একটি ভবন এমন হতে হবে, যাতে কৃত্রিম উপায় ছাড়াই সেটি শ্বাস নিতে পারে, অর্থাৎ বাতাস চলাচল করতে পারে।
মসজিদটির মূল বৈশিষ্ট্য এর প্রশস্ত খোলা জায়গা। প্রকৃতির সাথে চমৎকার সাযুজ্য রেখে নকশা করেছেন মেরিনা তাবাশ্যুম। ফাঁক রেখে রেখে লাল ইটের গাঁথুনিতে গড়া দেয়ালের দ্ইুপাশ সমন্বিতভাবে বহন করছে বিশাল ছাদের ওজন, সম্ভব করছে আলো-বাতাসের অবাধ প্রবেশ।
টাইম লিখেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার ঝুঁকিতে থাকা দেশে স্বল্প খরচে এমন বাড়িঘর তাবাশ্যুম তৈরি করেছেন, যেগুলো সহজে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেওয়া যায়।
মেরিনা তাবাশ্যুম বুয়েট থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় লেখাপড়া শেষ করেন ১৯৯৫ সালে। পরে সহপাঠী স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরীর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন আর্কিটেক্ট ফার্ম আরবানা।
দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বের পর ১৯৯৭ সালে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন এই স্থপতি জুটি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘরের নকশা তারা করেছেন যৌথভাবে।
২০০৫ সালে বিচ্ছেদের পর আরবানা থেকেও আলাদা হয়ে যান মেরিনা। গড়ে তোলেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘মেরিনা তাবাশ্যুম আর্কিটেক্টস’।