জলাবদ্ধতার সাথে যোগ ‘ডেঙ্গু’ ঝুঁকি

4

নিজস্ব প্রতিবেদক

অসহনীয় গরমে স্বস্তির বৃষ্টিও দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নগরীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের। সামান্য বৃষ্টি হলেও তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট। এমন দুর্ভোগময় পরিস্থিতির মধ্যে যোগ হয়েছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। কারণ বর্ষাকালে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি থেকে ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বহনকারী এডিস মশার জন্ম হয়। তাই এডিস মশার প্রজনন ধ্বংস করতে নগরবাসীকে সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়ে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলছেন, ‘এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র বাড়ছে, বিশেষ করে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মশার ডিম পাড়া ও প্রজননের জন্য খুবই উপর্যুক্ত সময়। শীতের আগ পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব থাকবে। আমরা সকলে জানি ডেঙ্গু জ্বর হয় এডিস মশার কারণে। তাই মশা নিয়ন্ত্রণই হচ্ছে ডেঙ্গু প্রতিরোধ তথা তার প্রকোপ কমানোর প্রধান উপায়। মশার প্রজনক্ষেত্রে বা ডিম দেয়ার স্থান যাই বলিনা কেন এগুলোকে ধ্বংস করতে হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাটালি হিলস্থ চসিক নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
সভায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সঠিক জায়গায় বর্জ্য ফেলতে হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, ‘আমরা নিয়মিত খাল-ড্রেন পরিষ্কার করছি কিন্তু বাসাবাড়ির আবর্জনা খাল-ড্রেনে ফেলে আবার তা ভরাট করছি। মেয়র ডোর টু ডোর কর্মীদের হাতে গৃহস্থালী বর্জ্য তুলে দেয়ার জন্য নগরবাসির প্রতি অহবান জানান।’
চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগকে উদ্দেশে মেয়র বলেন, মশক নিধন কর্মীদের বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, অফিস আদালতের আনাচে-কানাচে ও জলাশয়ে মশার ওষুধ ছিটানো এবং মশক নিধন কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। মশক নিধন কাজে নিয়োজিতদের জন্য আলাদা পোষাক, মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য স্প্রে, ফগার মেশিন ও ওষুধ যথাযথভাবে সরবরহা করা হবে বলে জানান। মেয়র কোরবানির পশুর বর্জ্য নিদিষ্ট সময়ের পূর্বে পরিষ্কার করায় সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি নগরবাসিকে ডেঙ্গু জ¦রে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরার্মশ নেয়ার আহবান জানান।

যেসব সতর্কতা অবলম্বন করার আহবান
ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে মেয়র নগরবাসিকে দিনের বেলা মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো, বাসাবাড়ির দরজা জানালা ও ভেন্টিলেটরে মশা নিরোধক নেট ব্যবহার, শিশুদের স্কুল ড্রেসের ফুলহাতা শার্ট, ফুল প্যান্ট, মোজা ব্যবহার, পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারিকলের খোসা, ফুলের টপ, বালতি, ড্রাম, প্লাস্টিক ও সিমেন্টের ট্যাংক, কিংবা মাটির গর্তে ৩-৫ দিনের বেশি জমানো পানি না রাখা এবং গাড়ির টায়ার, এসির নিচে, ফ্রিজের নিচে সামান্য পানি জমে থাকলেও তা পরিষ্কার ও নিষ্কাশন করার জন্য নগরবাসির প্রতি আহবান জানান। ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে আগামী সাপ্তাহে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে একযোগে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হবে।
বর্জ্য স্ট্যন্ডিং কমিটির সভাপতি মো. মোবারক আলীর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন-কাউন্সিলর হাজী মো. নুরুল হক, আবদুল বারেক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পরিচ্ছন্ন বিভাগের জোন প্রধানদের মধ্যে প্রণব শর্মা, হাসান রেজা, কল্লোল দাশ, আলী আকবর, মোহাম্মদ হাসান, আবু তাহের প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইতোমধ্যে নিমাণাধীন বিভিন্ন টাওয়ার ও ইমারত নির্মাণের জন্য তৈরিকৃত জলাধারে জমা পানি রাখার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, যাদের বাড়ি বা আঙিনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানসহ আনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।