চার ওয়ার্ডে বিদ্রোহী নিয়ে বেকায়দায় বিএনপি

96

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে কাউন্সিলর প্রার্থীকে দলীয় সমর্থন দেয় বিএনপি। একক কাউন্সিলর প্রার্থী দিলেও কৌশলগত কারণে কিছু ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থীকে অলিখিত সমর্থন দেওয়া হয়। সমর্থন পাওয়া এসব প্রার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় প্রত্যাহারপত্র। শেষ দিনে ৯ জন প্রার্থী প্রত্যাহার করলেও ৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অলিখিত সমর্থন পাওয়া এ চার প্রার্থী এখন বিএনপির গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
দলীয় সমর্থন পাওয়া প্রার্থীদের বাইরে ১৩টি সাধারণ ও ২টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে বিএনপির মোট ১৬ জন (বিদ্রোহী) প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনে। এরমধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে ১৮ নং পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তৈয়ব বাদ পড়েন। তার জায়গায় স্থান পান নগর যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল হক মাসুম। অন্যদিকে দল সমর্থিত হাফিজুল ইসলাম বাছাইয়ে বাদ পড়ায় ২০ নং দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডে দলীয় সমর্থন পান বিদ্রোহী প্রার্থী লিয়াকত আলী। ৮ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। তবে তিনটি ওয়ার্ডে চারজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। শেষ পর্যন্ত এই চার প্রার্থী নিজেদের বিদ্রোহীর তালিকায় নাম লেখান। এদের মধ্যে ২৬ নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে বিএনপি বর্তমান কাউন্সিলর আবুল হাসেমকে সমর্থন দেয়। ওয়ার্ডটিতে নগর বিএনপির সদস্য আজিজুল হক বাবুল ও মহসিন আলী চৌধুরীও প্রার্থী হয়েছেন। একই ওয়ার্ডে তিন প্রার্থী নিয়ে বড় বেকায়দায় পড়েছে ওয়ার্ডটি বিএনপি। সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মধ্যে দুই নারী নেত্রী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। ৯, ১০ ও ১৩ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ইসমত আরা জেরিন এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে শামীমা নাসরিন বিদ্রেহীর তালিকায় নাম লেখান।
চার বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের জন্য। কি হয় দেখা যাক। যদি চেষ্টা সফল না হয়, তাহলে দলীয়ভাবে যেটা ব্যবস্থা নেয়ার সেটা হবে। প্রত্যাহারপত্রে যে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছিল সেটা দলীয় বিষয় ছিলো। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাহারের কোনো পত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। এখন কেউ সমাধানে না আসলে সেটা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি কাউন্সিলর প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন ফরম দেয়ার সময় স্বাক্ষর নিয়ে নেয় প্রত্যাহার ফরমে। একই ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী বা বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত এ ফর্মূলা থেকে সরে আসে দলটি। কৌশলগত কারণে একাধিক প্রার্থীকে অলিখিত সমর্থন দেয়। দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হতে পারে এমন আশংকায় একাধিক প্রার্থীকে উৎসাহিত করা হলেও এখন গলার কাঁটাতে পরিণত হতে যাচ্ছে চার প্রার্থী। আজ শুক্রবারের মধ্যে এ চার বিদ্রোহী প্রার্থীকে সরে যাওয়ার জন্য দল থেকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর বলেন, আমরা তাদের দুইদিনের সময় বেঁধে দিয়েছি। দুইদিনের মধ্যে তারা প্রত্যাহার করে নিবেন। এখন তো নির্বাচন কমিশনে প্রত্যাহার করতে পারবেন না। নিজেরা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাবেন। শুক্রবার তাদের সময় শেষ হবে।
অবশ্য বিদ্রোহীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিদ্রোহী চার প্রার্থীর মধ্যে শামীমা নাসরিনের অভিযোগ, রাতের আঁধারে তার প্রার্থিতা পরিবর্তন করে মাহমুদা সুলতানা ঝর্ণার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম ঘোষণার দিনও তার নাম ছিলো তালিকায়। অবশ্য তার এ যুক্তির সত্যতা মিলে ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়। বিদ্রোহী এ চার প্রার্থী এখন প্রচারণায় রয়েছেন। দেখার বিষয় প্রচারণা থেকে তাদের কিভাবে ঠেকাবে বিএনপি।