চন্দনাইশে জমি সংক্রান্ত মামলায় আটক ৩

88

চন্দনাইশ পৌরসভার এক কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অপহরণ করে নিয়ে জোরপূর্বক সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নেয়ায় কাউন্সিলরসহ ৯ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মৃদুল পাল। মামলার সূত্র ধরে গতকাল শনিবার ভোরে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশ পৌরসভা দক্ষিণ গাছবাড়িয়া এলাকার মৃত নিখিল চন্দ্র পালের ছেলে মৃদুল পালকে গত ২৮ আগস্ট অপহরণ করে হাশিমপুর সোনাইছড়ি পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে আটক করে রাখে। পরে গাছবাড়িয়া এলাকার ইদ্রিস মুন্সি ও গাছবাড়িয়া
ষ পৃষ্ঠা ৯, কলাম ৭.
ষ শেষ পৃষ্ঠার পর
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী প্রবীর কান্তি পাল উপস্থিত হয়ে মৃদুল পাল থেকে জোরপূর্বক জমি রেজিস্ট্রির কাগজে স্বাক্ষর নেয়। সে থেকে মৃদুল পাল স্ব-পরিবারে এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়ায়।
গত ১ সপ্তাহ পূর্বে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হলে তিনি চন্দনাইশ থানায় এ বিষয়ে মামলা দায়ের নির্দেশ দেন। অবশেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মৃদুল পাল স্থানীয় একজন কাউন্সিলরসহ ৯ জনকে আসামি করে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অপহরণ, মারধর, জোরপূর্বক রেজিস্ট্রি দলিলে স্বাক্ষর নেয়াসহ হত্যা করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ মামলার সূত্র ধরে গতকাল শনিবার ভোরে দক্ষিণ গাছবাড়িয়া এলাকার কমল মিয়ার ছেলে মনির আহমদ (৫২), জাগির আহমদ (৩৬), মৃত নাদেরুজ্জামানের ছেলে মো. আলমগীরকে (৩৪) আটক করে।
আটককৃতদের শনিবার আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. মাহাবুবুল আলম আকন্দ।
তিনি বলেন, মৃদুল পালের সাথে স্থানীয় মনিরের জমি বিক্রয় নিয়ে বিরোধ হলে স্থানীয় কাউন্সিলরের নিকট বিচার-মীমাংসার জন্য যান। তিনি কাউন্সিলর হওয়ায় বিচার করার জন্য জমির পাওয়ার আলমগীরের নামে দেয়ার জন্য বলে ৩’শ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। পরবর্তীতে স্ট্যাস্প পরিবর্তন করে আমোক্তারনামা নেন আলমগীরের নামে ২০১৭ সালে। এরপর কাউন্সিলর এ দীর্ঘ সময়ে আলমগীর থেকে ঐ জায়গা দেয়ার কথা বলে ৫ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। মনির জায়গাটি ক্রয় করার জন্য পরবর্তীতে আলমগীরের স্মরণাপন্ন হন। এক পর্যায়ে জমির মূল্য ৮ লক্ষ টাকা ধার্য হয়। কিন্তু মনির আলমগীরকে বলেন যে, জমির প্রকৃত মালিক মৃদুল পালকে রেজিস্ট্রি দিতে হবে। তখন আলমগীর কাউন্সিলরের নিকট তার দেয়া ৫ লক্ষ টাকা কিভাবে পাবেন সে প্রশ্ন করেন। এর প্রেক্ষিতে কাউন্সিলরের লোকজন গত ২৮ আগস্ট দুপুরে মৃদুলের বাড়িতে গিয়ে তাকে সিএনজি টেক্সি করে সোনাইছড়ি পাহাড়ে নিয়ে আটক করে রাখে। সেখানে রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারি ও দলিল লেখক ইদ্রিস মুন্সি উপস্থিত হয়। এর পূর্বে কাউন্সিলরের লোকজন মৃদুলের কাঁধে অস্ত্র দিয়ে ছবি তুলে বলে, দলিলে স্বাক্ষর না করলে অস্ত্র মামলা দিয়ে ফাঁসাবে বলে হুমকি দেয়। তাছাড়া তারা মৃদুলকে মারধর করে জোরপূর্বক রেজিস্ট্রি দলিলে স্বাক্ষর নেয়।
পৌর মেয়র মাহাবুবুল আলম খোকা জানান, কয়েকদিন আগে তার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিদেশ যাওয়ার কথা বলে ৩ মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। বিষয়টি থানা পুলিশ অবহিত হওয়ায় উক্ত কাউন্সিলরের বিদেশ গমণের উপর নজরদারি রেখেছেন বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সাথে সম্পৃক্তরা গ্রেপ্তার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এদিকে পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানামূলে সাতবাড়িয়া এলাকার মৃত এয়াকুব আলীর ছেলে শামসুল আলমকে (৭৫) আটক করে। অপরদিকে ৫৪ ধারায় দক্ষিণ ধোপাছড়ির ক্যাম্প পাড়ার মৃত নুর আহমদের ছেলে নুরুল আমিনকে (৬০) আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।