ঘুমধুম প্লাবিত পাহাড়ধসে আহত ৪

14

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু গ্রাম আবারো প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দী অসহায় মানুষরা জীবন বাঁচাতে দিকবিদিক ছুটছে। রবিবার সকালে পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ে তুমব্রæর পশ্চিমকূল, হিন্দুপাড়া, বাজারপাড়া, কোনারপাড়া, মধ্যমপাড়া ও তুমব্রু বাজারে অর্ধশতাধিক দোকানপাট এবং মৎস্য চাষীদের পুকুর। কয়েকদিনের ব্যবধানে ২য় দফায় পানিবন্দী হওয়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এলাকার জনসাধারণ। তুমব্রæ বাজারের ব্যবসায়ী মো. ইমাম হোসেন বলেন, ১ম ও ২য় বার টানা বর্ষণের কারণে পানিতে ভেসে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বিভিন্ন মালামাল। তিনি আরো বলেন, ধার-দেনা করে দোকানে মূলধন দিয়ে মালামাল মজুদ করেছিলাম, হঠাৎ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেল আমার ব্যবসার অনেক মালামাল। তুমব্রু বাজার পাড়ার মৎস্যচাষী হামিদুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে বাজারে নিজ মালিকানাধীন ৪০ শতক পুকুরে মাছের চাষ করেছি, সেখানে রুই, কাতাল, মাগুরসহ নানা প্রজাতির প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মাছের পোনা ছেড়েছি। মৎস্য পুকুর পরিচর্যার শ্রমিক, মাছের খাবার সহ আনুষাঙ্গিক খরচ মিলে অন্তত ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। গত ২৭ জুলাই একবার এবং ৩১ জুলাই রাত থেকে শুরু হওয়া ২য় দফার টানা প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মাছের পুকুরটি প্লাবিত হয়ে সম্পূর্ণ মাছ ভেসে গেছে, অনেক ক্ষতি হয়ে গেল আমার।
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় রবিবার দুপুরে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৪জন আহত হয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মনজয় পাড়া এলাকায়। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা পার্শ্ববর্তী উখিয়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। মনজয় পাড়ার এক গাড়িচালক মোহাম্মদ আইয়ুব আলীর বাসার উপর একটি পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ঘরে থাকা তার স্ত্রী শাহানা আক্তার (৩৬) পুত্র মো. রাসেল (১৮) মেয়ে তসলিমা আক্তার (১৩) ও পারভেজ (৯) আহত হয়।
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, ৩১ জুলাই (শনিবার) রাত থেকে আবারও টানা বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢল এসে তুমব্রু এলাকা প্লাবিত হয়ে চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আর এবার প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চেয়ারম্যান আরো বলেন, রাত থেকে অনবরত বৃষ্টি হওয়ায় মনজয় পাড়ায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে আর এতে ৪ জন আহত হয়েছেন।
জুলাই মাসের ২৭ তারিখ থেকে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ঘুমধুম ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ে। এরপর আবার ১ আগস্ট (রবিবার) টানা বর্ষণে তুমব্রু গ্রাম প্লাবিত হয়। আর পাহাড় ধসে আহত হয় ৪জন।