ঢাকা প্রতিনিধি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আরও কিছুদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড। গতকাল সোমবার বিকেলে বোর্ডের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
গতকাল খালেদা জিয়ার শারীরিক সুরক্ষায় আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে আগামী এক সপ্তাহ খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আজ থেকে তাকে ধীরে ধীরে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসকরা। দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের সমন্বয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক চলে। বোর্ডের বৈঠকে লন্ডন ও আমেরিকা থেকে বিদেশি চিকিৎসকরা জুমে যোগ দেন বলে জানা গেছে।
ডা. জাহিদ বলেন, আজকে (সোমবার) মেডিকেল বোর্ড ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সর্বশেষ অবস্থা এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, উনাকে আরও কিছুদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখবেন।
হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে মেডিকেল বোর্ডের গতকালের বৈঠকে ১৯ সদস্যের মধ্যে ৭ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক জাহিদ আরও বলেন, ম্যাডামের এনজিওগ্রাম করার পর মেডিকেল বোর্ড ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন, সেটা শেষ হবে আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার)। কাল (আজ) বিকেল ৫টায় মেডিক্যাল বোর্ড বসবে। এটা নিয়মিত বৈঠক। চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
গত শুক্রবার (১০ জুন) গভীর রাতে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় হঠাৎ বুকের প্রচÐ ব্যথা নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার হৃৎপিÐে এনজিওগ্রাম করে একটি বøক অপসারণ করে স্টেন্টিং করা (রিং পরানো) হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের হৃৎপিÐে আরও দুইটি বøক রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডা. জাহিদ।
২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হল।
দুর্নীতির মামলায় দÐিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে।
২০২১ সালে একবার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠাতে কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।