কুপিয়ে ও জবাই করে দু’জনকে হত্যা

16

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরী ও বাঁশখালীতে জবাই করে এবং কুপিয়ে দু’জনকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পৃথক ঘটনা দু’টি ঘটে।
জানা গেছে, নগরীর হালিশহরের শিশু পল্লীর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ১ নম্বর লেইন এলাকায় রাবেয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে জবাই করে খুন করেছে পাষন্ড স্বামী। ঘাতক স্বামীর নাম মো. জামিন (৩০)। ঘটনার পরপর তিনি পালিয়ে যান।
অপরদিকে বাঁশখালীর ইকোপার্ক রোডের আদর্শগ্রাম এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে কোরবান আলী (২৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
হালিশহরে নিহত রাবেয়া আক্তার হাটহাজারী উপজেলার মানিক মিয়ার মেয়ে। যে বাসায় হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, ওই বাসার কেয়ারটেকার হিসেবে কর্মরত আছেন নিহতের বাবা মানিক মিয়া। সেখানে একটি কক্ষে মেয়ে ও জামাইকে থাকতে দেন। ঘাতক স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের করগাঁও বলে জানা গেছে। মানিক মিয়া বলেন, সন্ধ্যার দিকে তার মেয়ে জামাইয়ের জন্য দোকান থেকে নাস্তা আনতে যায়। নাস্তা আনার ১০ মিনিট পর ঘরের বাইরে এসে বাবা বাবা বলে চিৎকার করে মাটিতে পড়ে যায়। তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি তার গলাকাটা। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ঘটনার বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে হালিশহর থানার ওসি জহির উদ্দিনকে ফোন দিলেও পাওয়া যায়নি। তবে থানার ‘ডিউটি অফিসার’ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘ঘটনাস্থলে ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম গেছে।’
এদিকে বাঁশখালীতে নিহত কোরবান আলী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মৃত হাকিম আলীর পুত্র। এ ঘটনায় জড়িত জমির উদ্দিন প্রকাশ কালু নামে একজনকে গতকাল রাতেই আটক করেছে পুলিশ। ঘটনায় অন্যান্য আহতরা হলেন- কবির আহমদের ছেলে মীর হোসেন (৪০), মো. মুন্সীর ছেলে আবু ছৈয়দ (৩৫) ও গুনু মিয়ার ছেলে বাদশা মিয়া (৬৪)।
বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, সন্ধ্যার দিকে তিনজন ও রাত ৮টার দিকে একজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এরমধ্যে সন্ধ্যায় আসা তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চমেকে পাঠানো কোরবান আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় আদর্শগ্রামে অপু মিয়ার চা দোকানের পাশে রাস্তার উপর আড্ডা দিচ্ছিলেন কোরবান আলীসহ কয়েকজন। হঠাৎ কথা কাটাকাটির জের ধরে কয়েকজনের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। এরমধ্যে জমির দা দিয়ে কোরবানের মাথায় কোপ মারে। তাৎক্ষণিক আহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হলে কোরবান আলীকে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাত ১১টার দিকে বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক পূর্বদেশকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা অভিযানে নামি। তাৎক্ষণিক একজনকে আটক করেছি। আরও আসামি ধরতে মাঠে আছি। পূর্ববিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। আটককৃত আসামি এর আগেও পুলিশ কোপানোর ঘটনার সাথে জড়িত ছিল।’
প্রসঙ্গত, বাঁশখালীতে গত চারদিনের ব্যবধানে দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। হঠাৎ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। গত দুই বছরে ১৯টি ঘটনা ঘটেছে।