কারও কাছে কোনদিন মাথানত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি

17

পূর্বদেশ ডেস্ক

বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন ও অর্জনকে দেশের কিছু মানুষ কেন মেনে নিতে পারছে না এমন প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে কেন একদল মানুষ মনে কষ্ট পায়? কেন তারা কোন অর্জনকে বাংলাদেশের অর্জন বলে মেনে নিতে পারছে না?’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা, তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। তারপরও কিছু মানুষ এটিকে অর্জন হিসেবে নিতে পারে না।’ ‘কেন তাদের এই দৈন্যতা?’ কোথায় তাদের সমস্যা? সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। খবর বাসসের
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তির ১৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে গণভবনে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশে প্রবৃদ্ধি যখন নেতিবাচক তখন আওয়ামী লীগের কারণে বাংলাদেশ মহামারীর সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাঁচ শতাংশের বেশি অর্জিত হয়েছে এবং তাঁর সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটও দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগকে সব প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সর্বদাই তৎপর রয়েছে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ একটি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে, যা প্রতিটি নেতাকর্মীর মনে রাখতে হবে এবং কোনো লোভের জন্য সেজন্য দেশকে কারো হাতে তাঁরা তুলে দিতে পারে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় উজানে নাও ঠেলেই চলতে হয়েছে। জনগণই হলো আমাদের শক্তি। তাই কারও কাছে কোনদিন মাথা নত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার থেকে, বাবার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু) কাছ থেকে এটা শিখেছি যে, কারও কাছে বা কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।
‘এক/এগারো’র-এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে কারান্তরীণ সময়ের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতবার গ্রেপ্তার হয়েছি, ততবারই নেতাকর্মীদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছি, চিঠির মাধ্যেমে নেতাকর্মীদের নিদের্শনা দিয়েছি, দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা সবসময় ঠিক থাকে- এটা বাবার সময়ও দেখেছি। দলের দুঃসময়ে তৃণমূল নেতারা ঠিক থাকে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন ও চাপে বাধ্য হয় আমাকে মুক্তি দিতে। সে সময়ে মাত্র ১৫ দিনে তাঁর মুক্তির জন্য ২৫ লাখ সই সংগ্রহ করা হয়। যাতে সে সময়কার সরকারও অবাক হয়।
তিনি বলেন, এটাই আওয়ামী লীগ, জনগণই এর শক্তি। আর বিএনপির ক্ষেত্রে তাদের জন্মই হল আজন্ম পাপ। জনগণ বিএনপির শক্তি না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না। আমরা আমাদের কাজ করে যাবো। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে যাবো। যে যাই বলুক, আমরা আমাদের কাজ করে যাবো। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত যেন সুফল পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করেছি। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এর আগে গতকাল দুপুর পৌনে ১২টায় কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।