চকরিয়ায় ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জবর দখল চেষ্টা ও বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পৌর সদরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস স্টেশনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জমির মালিক বাদী হয়ে কাউন্সিলর মুজিবসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে আরো ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী জমির মালিক পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস স্টেশনপাড়া এলাকার নজির আহামদের ছেলে আবুল কাশেম থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে দাবি করেন, পৌরসভার চিরিংগা মৌজার বিএস ৭১ নম্বর খতিয়ানের ৬৪৬ খতিয়ানের অধীন পৈত্রিক ও খরিদা সত্ত¡সহ তার সর্বমোট ১২.৬৬ শতক জমি বয়েছে। ওই জমিতে দ্বিতল বিশিষ্ট পাকাঘর নির্মাণ করে তিনি স্বপরিবারে বসবাস করে আসছেন। বাদী আরও দাবি করেন, এসব জমি নামজারী জমাভাগ খতিয়ান সৃজন পূর্বক প্রতিবছর সরকারি খাজনাও পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু আসামিরা বিভিন্ন সময় তার বসতভিটা জবর দখলের চেষ্টা করলে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কক্সবাজার এর আদালতে একটি এম আর মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আদালত বিরোধীয় জায়গার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) চকরিয়াকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিরোধীয় জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু আদালতের এ নির্দেশনা অমান্য করে কাউন্সিলর মুজিবুর রহমান সশস্ত্র দলবল নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার বসতভিটা জবর দখলের জন্য গেলে তার ছোটভাই আলা উদ্দিন তাদের বাঁধা দেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা তাকে লোহার রড় দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী আরও দাবি করেন, এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ছাদের উপর উঠে তিনটি পানির টাংকি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার পর নিচতলায় বাড়িতে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় চারলাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় তাদের শোর চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ৩-৪ রাউন্ড ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে গা ঢাকা দেয়। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যায়।
এ ঘটনার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে কয়েক দফায় ফোন করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় পরে তার মুঠোফোনে এসএমএস পাঠানো হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তিনি কোন সাড়া না দেয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস স্টেশনপাড়া এলাকায় জমি জবর দখল চেষ্টার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় জমির মালিক দাবিদার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস স্টেশনপাড়া এলাকার নজির আহামদের ছেলে আবুল কাশেম বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
