করোনায় আরও ৩৮ মৃত্যু শনাক্ত ১৯০৭ চট্টগ্রামে মৃত্যুহীন দিন

1

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ১৪৭ জনের। মৃত ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন ও নারী ২৫ জন। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯০৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার ১১০ জনে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে, চট্টগ্রাম জেলায় গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু ঘটেনি। তবে নতুন করে ৪১ জনের দেহে পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব। এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
স্বাস্থ্য অধিপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯১৯ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯ জন। সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮০৮টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়েছে। এসব ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩০ হাজার ১৬৯টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৭৫৬টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৫টি।
এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে সাতজন, খুলনা বিভাগে আটজন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে দু’জন ও ময়মনসিংহে একজন রয়েছেন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩৫ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে তিনজন মারা গেছেন।
মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দু’জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দু’জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন ও ১০০ বছরের ঊর্ধ্বে একজন রয়েছেন।
এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৫০৭ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৫৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৬১৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪৫ হাজার ৭৩৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। প্রায় তিন মাস পর মৃত্যুহীন দিন দেখল চট্টগ্রাম। তবে এদিনের আগপর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ২৭৯ জন। তবে, সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামে ১ হাজার ৫১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ জন। এদের মধ্যে নগরের ৩৪ এবং উপজেলা পর্যায়ে ৭ জন রয়েছেন। সংক্রমণের হার ২ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১৭২ জন। সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামের ১২টি ল্যাব এবং কক্সবাজারের একটি ল্যাব মিলে ১ হাজার ৫১৩ জনের নমুুুুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪১ জনের। তবে এ সময় চট্টগ্রামে করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। বিআইটিআইডিতে ৪৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ১৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হলেও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে চট্টগ্রামের ৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারো দেহে করোনার অস্তিত্ব মেলেনি।
এছাড়াও এন্টিজেন টেস্টে ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরের ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ জনের, শেভরনে ৪৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ জনের, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। আরটিএলে ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও কারো দেহে করোনা শনাক্ত হয়নি।
নগরের মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের এবং ইপিক হেলথ কেয়ারে ৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।